দেশের খবর: রাজশাহী থেকে নওগাঁগামী এ্যারো বেঙ্গল পরিবহণের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়ায় এক স্কুলছাত্রীসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও চারজন আহত হয়েছে। নিহতরা হলেন, নগরীর শাহ্ মখদুম থানার মোড়ের মোটরসাইকেল আরোহী ইসমাইল হোসেন পিঙ্কু (২৪) ও সবুজ ইসলাম (৩২) এবং নগরীর শাহ্ মখদুম থানার ভাড়ালিপাড়ার রুস্তমের ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে আনিকা (১৩)।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন, মন্ডলের ছেলে আসমত (৩০), বুলবুলের ছেলে সজিব (২৫), মৃত সোহরাবের স্ত্রী রিনা (৪৫) ও মিঠু। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর নওদাপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নগরীর শাহ্ মখদুম থানার ওসি জিল্লুর রহমান জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী থেকে নওগাঁর উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল এ্যারো বেঙ্গল পরিবহণের একটি বাস। এ সময় বাসটি নওদাপাড়া বাজারের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশের তিনটি দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী সবুজ ও পিঙ্কু মারা যান এবং অপর ৫জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকল কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে পাঠান। পরে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক স্কুল ছাত্রী আনিকা মারা যায়। চারজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাৎক্ষনিক রাস্তা অবরোধ করে যানবাহন ভাংচুরের চেষ্টা করে ও দুটি যানবাহন ভাংচুর করে। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) শাহ্ মখদুম ডিভিশনের উপ-কমিশনার হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, এ্যারো বেঙ্গল পরিবহণের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দোকানে ঢুকে পড়ার ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে এবং ৪ জন আহত হয়েছে।
অন্যদিকে, দুর্ঘটনায় নিহত স্কুল ছাত্রীকে রামেক হাসপাতালে দেখতে পান আরএমপি কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার। তিনি হাসপাতালে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করেন।
শোক র্যালি শেষে বাড়ি ফেরা হলো না আনিকার
জাতীয় শোক দিবসের র্যালি শেষে বাড়ি বাসায় ফেরা হলো না স্কুল ছাত্রী আনিকার। বুধবার সকালে জাতীয় শোক দিবসের র্যালি শেষে দুই বোন বাড়ি ফেরার পথে নওদাপাড়ার একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছিল। এ সময় রাজশাহী থেকে নওগাঁগামী এ্যারো বেঙ্গল পরিবহণের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আনিকাকে চাপা দিয়ে দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এতে গুরুতর আহত আনিকা (১৩) রামেক হাসপাতালে মারা যান। সে নওদাপাড়া শাহ্ মখদুম স্কুলের স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তিনি নগরীর নওদাপাড়ার ভাড়ালিপাড়া এলাকার রুস্তমের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে জাতীয় শোক দিবসের র্যালি শেষে তারা বাড়ি ফিরছিলো। পথে তারা নওদাপাড়া বাজার এলাকায় আইসক্রিম খাচ্ছিলো দাঁড়িয়েছে। এসময় নিয়ন্ত্রণ হারা এ্যারো বেঙ্গল নামের বাসিটি দ্রুত ছুটি আসে। এ সময় পাশে থাকা ঋতু সরে গেলেও আনিকা সরে যেতে পারেনি। এতে বাস ও দোকানের দেওয়ালের সঙ্গে চাপা লাগে আনিকা। স্থানীয়রা আরও জানায়, ঘাতক বাসটি হেলপার বাসটি চালাচ্ছিল। অদক্ষ হওয়ায় অসাবধানতায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় বাকি নিহতরা হলেন, শাহ্ মখদুম থানার মোড় এলাকার ইসলামের ছেলে ইসমাইল হোসেন পিংকু (২৪) এবং মোহাম্মদ আলীর ছেলে সবুজ ইসলাম (৩২)।