খেলার খবর: এর চেয়ে আর উত্তেজনা ছড়াতে পারে না কোনো ম্যাচ! পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকল নাটক আর রোমাঞ্চ। কে হবে এবারের এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন, বাংলাদেশ না ভারত? অপেক্ষা করতে হলো চিত্রনাট্যের শেষ পর্যন্ত। অবশেষে শেষ হাসি হাসল টিম ইন্ডিয়া। চূড়ান্ত মহারণে টাইগারদের ৩ উইকেটে হারিয়ে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের মুকুট পরল রোহিত বাহিনী। এ নিয়ে সব মিলিয়ে ৭বার এশিয়ার রাজা হওয়ার গৌরব অর্জন করল তারা।
অন্যদিকে, এ নিয়ে তৃতীয়বার স্বপ্নভঙ্গ হলো বাংলাদেশের। এর আগে ২০১২ সালে ওয়ানডে ফরম্যাটে এবং ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলে টাইগাররা। প্রথমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ রানের হারে বেদনাদায়ক চিত্রনাট্য রচিত হয়। আর সবশেষ টি-টোয়েন্টি সংষ্করণে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হেরে দ্বিতীয়বার স্বপ্নভঙ্গ হয়। এবারো তার ব্যত্যয় ঘটল না।
এশিয়া কাপের টানটান উত্তেজনাকর ফাইনালে ভারতের কাছে ৩ উইকেটে হেরে ভেঙ্গে গেল বাংলাদেশের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। দুবাই স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ২২৩ রানের লক্ষ্যকে ৩ উইকেট হাতে নিয়েই টপকে যায় ভারত। সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেছেন রোহিত শর্মা। এছাড়া ৩৭ রান এনেছে দিনেশ কার্তিকের ব্যাট থেকে।
এর আগে বাংলাদেশের দেয়া ২২৩ রানের সাদামাটা লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা সাবধানে করলেও চাপে পড়ে ভারত। ভালোই শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার। দলীয় ৩৫ রানের মাথায় নাজমুল ইসলামের বলে সাজঘরে ফেরেন ১৫ রান করা শেখর ধাওয়ান। এরপর আমবাটি রাইডুকে মাত্র ২ রানেই বিদায় করেন মাশরাফি। ৪৬ রানে ২ উইকেট হারানো ভারতকে এরপর এগিয়ে নিতে থাকেন অদিনায়ক রোহিত শর্মা ও দিনেশ কার্তিক। তবে ৮৩ রানে রুবেল হোসেন রোহিত শর্মাকে ফিরিয়ে দিলে চাপে পড়ে যায় ভারত।
এরপর দিনেশ কার্তিক ও ধোনির জুটিতে এগোতে থাকে ভারত। মাহমুদুল্লাহর বলে কার্তিক আউট হন দলীয় ১৩৭ রানের। ১৬০ রানের মাথায় ধোনিও বিদায় নিলে চাপে পড়ে ভারত। কেদার যাদব আহত হয়ে অবসর নেন একটু পর। ফলে জাদেজা ও ভূবনেশ্বরের উপর এসে পড়ে বিশাল দায়িত্ব। এই দুজন বুঝে শুনে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন ভারতকে। জয় থেকে মাত্র ১১ রান দূরে থাকা অবস্থায় রুবেলের অসাধারণ বলে জাদেজার পতন হলে আরো একবার জমে ওঠে খেলা। এরপর মোস্তাফিজের ম্যাজিকে বিদায় নেন ভূবনেশ্বরও। জয়ের জন্য প্রয়োজন ১১ বলে ৯ রান। ভারত। বাকি পাঁচ বলে তিন রান এলে শেষ ওভারে দরকার হয় ৬ রান। মাহমুদুল্লাহর সেই ওভার থেকে প্রয়োজনীয় রান তুলতে শেষ বল পর্যন্ত খেলতে হয় ভারতকে। কেদার যাদব ও কূলদীপের কৃতিত্বে সেই রান পায় তারা।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ওপেনিং জুটিতে ১২০ রানের অসাধারণ পার্টনারশিপের পর আর দাঁড়াতে পারেনি সোজা হয়ে। মিডল অর্ডারদের একের পর এক আত্নহত্যায় শেষ পর্যন্ত ২২২ রানে থেমে যায় টাইগারদের ইনিংস। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২১ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছেন লিটন। এছাড়া ৩৩ রান করেছেন সৌম্য সরকার। ভারতের পক্ষে ৪৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন কূলদীপ যাদব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২২৫/৭ (৫০ ওভারে)
রোহিত ৪৭, শেখর ধাওয়ার ১৫
রুবেল ২/১৯, মোস্তাফিজ ২/৩৮
বাংলাদেশ: ২২২/১০ (৪৮.৩ ওভারে)
লিটন দাস ১২১, মিরাজ ৩২,
কূলদীপ ৩/৪৫
দুইদলের একাদশ:
বাংলাদেশ:
লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মিথুন আলি, মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হোসেন মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, নাজমুল ইসলাম অপু
ভারত একাদশ:
রোহিত শর্মা(অধিনায়ক), শেখর ধাওয়ান, আমবাটি রাইডু, মহেন্দ্র সিং ধোনি, দিনেশ কার্তিক, কেদার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, ভূবনেশ্বর কুমার, কূলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চাহাল, জসপ্রিত বুমরাহ