দেশের খবর: শেখ হাসিনাকে হটাতে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিতেও ড. কামাল হোসেনের আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, তার আসলে শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য তারেক জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিতেও কোনো আপত্তি আছে বলে মনে করি না।
মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বনানীতে নির্মিত বিআরটিএ’র নতুন ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঐক্যটা’ আসলে কে চালাবে? মূল দল হচ্ছে বিএনপি। আর বিএনপি চালায় কে? তাদের চেয়ারপারসন এখন জেলে। ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার অঙ্গুলি হেলনেই চলবে এটা। লন্ডন থেকে দলেরও নেতৃত্ব দিচ্ছে, এই জোটেরও (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) নেতৃত্বের কলকাঠি নাড়বেন তারেক রহমান।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কামাল হোসেনের টার্গেট সম্ভবত ক্ষমতায় যাওয়া নয়, তার টার্গেট হলো শেখ হাসিনাকে ক্ষমতার মঞ্চ থেকে হটানো। সেজন্য তারেক রহমানের মতো যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যাক্তির নেতৃত্ব মেনে নিতে তার আপত্তি আছে বলে মনে করি না।
ঐক্যফ্রন্ট গঠন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যতটুক জানি বিকল্প ধারাকে সুকৌশলে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টে বিকল্প ধারা থাকুক এটা বিএনপি’র জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল না। কারণ ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী) বিএনপি’র আমলে প্রেসিন্ডেন্ট ছিলেন, তখন তাকে কিভাবে অপমান করা হয়েছিল। তার সঙ্গে একটা অস্বস্তির বিষয় বিএনপি’র বরাবরই ছিল। কাজেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই মনে করছেন বি. চৌধুরীকে যেভাবে অপমানজনক অবস্থায় বাড়িতে আমন্ত্রণ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছে, এরপর তিনি জাতীয় ঐক্যের সঙ্গে কি করে থাকেন?
কাদের বলেন, আগেও বলেছি ঐক্যের টিকে থাকার জন্য অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। শিগগিরই সংকটে পড়বে। তেলে আর পানিতে মেশানোর যে অপচেষ্টা সেটা অচিরেই ব্যর্থ হবে।
বিকল্প ধারাকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যে নেবেন কি-না? এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু বলতে পারি না। এজন্য ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। আমাদের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হবে, সেখানে নির্বাচন সম্পৃক্ত সবকিছু নিয়ে আলোচনা হবে। এই জোট সমীকরণ শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলা মুশিকল। বিকল্প ধারাকে জোটে টানার সম্ভাবনা আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব বিষয় নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা হবে এবং সিদ্ধান্ত হবে।
ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর আওয়ামী লীগ দুশ্চিন্তায় আছে কি-না? প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, আমরা একটুও চিন্তা করি না। এনিয়ে আমাদের কোন দুশ্চিন্তা কখনই ছিল না। এখনও নেই। কিছু কিছু দল আছে যাদের প্যাড আছে তো সিল নেই, সিল আছে তো প্যাড নেই।
ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে বলেন, তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর গণফোরাম করেছেন, সেখানে তিনি জনসম্পৃক্ততার দিক থেকে তেমন সাড়া পাননি। তিনি দেশের সিনিয়র রাজনীতিক হিসেবে হয়তো ভেবেছিলেন বেরিয়ে আসলে হাজার হাজার লোক তার সঙ্গে জোট বাঁধবে, জনসম্পৃক্ত হবে। কিন্তু তিনি জনবিচ্ছিন্ন রাজনীতিক হিসেবে নিজের অস্তিত্ব কোনরকমে বজায় রেখেছেন।