রাজনীতির খবর: মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা সৎমায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সরকারের নির্দেশনা মেনে রিটার্নিং কর্মকর্তারা বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকে এনে বৈঠক করে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপিসহ বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গণহারে বাতিল করা হয়েছে।
‘ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপত্রে অসংখ্য ত্রুটি থাকার পরও সেগুলোকে বাতিল করা হয়নি। দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হওয়া ও তথ্য গোপনের অভিযোগ থাকার পরও সরকারি দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়নি।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা হায়াত-উদ দৌলা খানের কার্যালয়ে রোববার মনোনয়নপত্র বাছাই কার্যক্রমে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ কোনো প্রার্থীকে কথা বলার সুযোগ দেননি তিনি।
তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধির বিধান হচ্ছে- প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তা হলে তাদের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। কোনো ডকুমেন্টস উপস্থাপন করতে চাইলে তা করতে দিতে হবে।
‘কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা যদি শুরুতেই প্রার্থীকে থামিয়ে দেন, তা হলে বুঝতে হবে রিটার্নিং কর্মকর্তা দুরভিসন্ধি নিয়ে কাজ করছেন। এভাবে সারা দেশেই রিটার্নিং কর্মকর্তারা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিএনপির মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন।’
রিজভী বলেন, তফসিল ঘোষণার পর রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া চলবে না। কিন্তু যদি রিটার্নিং কর্মকর্তা বা নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত অন্য কোনো কর্মকর্তা কোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থের পক্ষে কাজ করেন, তা হলে তা হবে গুরুতর অসদাচরণ। এটি সমগ্র নির্বাচন কমিশনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং নির্বাচনে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের ভোটে নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়, জনমনে শঙ্কা ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
রিজভী আরও বলেন, সম্প্রতি দেশব্যাপী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডে নির্বাচনে জনমতের সঠিক প্রতিফলন ঘটবে কিনা, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে জিজ্ঞাসা তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত রিটার্নিং কর্মকর্তারা যা করছেন, তা কেবলই প্রহসন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আয় কমে গেলেও ক্ষমতাসীন মন্ত্রী-নেতাদের সম্পদ বাড়ে অথচ এগুলোতে দুদক ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চোখ এড়িয়ে যায়। আসন্ন নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আবারও দেশব্যাপী গভীর অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।