অনলাইন ডেস্ক: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখল টিম টাইগার। অবশ্য এই জয়ের ধারা শুরু হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ টেস্ট টেস্ট থেকেই।
সেই সিরিজ ধরলে টেস্ট-ওয়ানডে মিলিয়ে আজ টানা ৭ম জয় তুলে নিল টিম টাইগার! মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উইন্ডিজকে ৮৯ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। এই জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। বল হাতে মাশরাফি-মুস্তাফিজদের দাপটের পর ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছেন মুশফিক-লিটন-সাকিবরা।
১৯৬ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্ক ব্যাটিং শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং লিটন দাস। ব্যক্তিগত ৬ রানে কেমার রোচের বল ক্যাচ দিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু বলটি নো বল হওয়ায় বেঁচে যান তিনি। এরপরেই তামিম ইকবালের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি হারায় বাংলাদেশ। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা দেশসেরা ওপেনার ব্যক্তিগত ১২ রানে রোস্টন চেইসের বলে ধরা পড়লেন দেবেন্দ্র বিশুর হাতে। ইমরুল কায়েস (৪) উইকেটে এসেই বাউন্ডারি হাঁকালেন।
তারপর বোল্ড হয়ে গেলেন থমাসের বলে।
মুশফিকের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রানের জুটি জমিয়ে ফেলেছিলেন অপর ওপেনার লিটন দাস। হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে কিমো পলের বলে বাজে শট খেলতে গিয়ে ৪১ রানে বোল্ড হয়ে যান এই তরুণ ওপেনার। ২১তম ওভারে ১০০ পার করে বাংলাদেশের স্কোর। চতুর্থ উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়েন মুশফিক আর সাকিব। হাত খুলে ব্যাটিং করে ২৬ বলে ৩০ রান করা বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার পাওয়েলের বলে ক্যাচ দিলে ভাঙে এই জুটি।
৫ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন সৌম্য সরকার। এই পজিশনে এটাই তার প্রথম ব্যাট করা। শুরু থেকেই চোখ ধাঁধানো সব শট খেলতে শুরু করেন তিনি। জয়ের কাছাকাছি গিয়ে রোস্টন চেইসের বলে থামে তার ১৩ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ১৯ রানের ইনিংস। এরপরই ক্যারিয়ারর ৩১তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিম। ভায়রা ভাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে (১৪*) নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ৫৫* রানে অপরাজিত মুশি। ৮৯ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের এই জয়ে ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
এর আগে আজ রবিবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯৫ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরু থেকেই টাইগার বোলারদের তোপের মুখে পড়ে সফরকারীরা। দুই পাশ থেকেই স্পিন আক্রমণ দিয়ে বোলিং শুরু করেন অধিনায়ক মাশরাফি। রান বাড়ানোর তাগিদে সাকিব আল হাসানকে তুলে মারতে গিয়ে রুবেল হোসেনের হাতে ধরা পড়েন কাইরন পাওয়েল (১০)।
এর মাঝেই দুইবার জীবন পান ড্যারেন ব্র্যাভো। মুস্তাফিজের বলে সহজ ক্যাচ ছাড়েন আরিফুল হক। এরপর রুবেলের বলে ব্র্যাভোর আরেকটি সহজ ক্যাচ ফস্কে যায় মুশফিকের গ্লাভস থেকে। ক্যারিবীয় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে অবশেষে ১৯ রানে ফেরান অধিনায়ক মাশরাফি। তার বলে চোধ ধাঁধানো ক্যাচ নেন ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা তামিম ইকবাল। এই মাশরাফির বলেই বলে ওপেনার শাই হোপ (৪৩) ধরা পড়েন মেহেদী মিরাজের হাতে।
৭৮ রানে তৃতীয় উইকেটর পতনের পর স্যামুয়েলসকে জীবন দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিপজ্জনক হেটমায়ার (৬) বিধ্বংসী হয়ে ওঠার আগেই তাকে বোল্ড করে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। রোভম্যান পাওয়েল (১৪) মাশরাফির বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিলে উইন্ডিজের ইনিংস অর্ধেক শেষ হয়। মারলন স্যামুয়েলসের (২৫) উইকেটটিও লিটন দাসের কৃতিত্ব। রুবেল হোসেনের বল উড়িয়ে মেরেছিলেন স্যামুয়েলেস। লং অনের সীমানার ওপর অসাধারণ দক্ষতায় বলটি তালুবন্দি করেন লিটন।
বিপদ সামলে ৭ম উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়েন রোস্টন চেইস এবং কিমো পল। ৩২ রান করা চেইস মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম শিকার হলে ভাঙে এই জুটি। শেষ ওভারে কিমো পলও (৩৭) মিরাজের দারুণ ক্যাচে মুস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। এক বল পরে দেবেন্দ্র বিশুকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে ‘কাটার মাস্টার’ তৃতীয় শিকার ধরেন। বোলিং তোপে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯৫ রানের বেশি করতে পারেনি উইন্ডিজ।