কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো : সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে দেবহাটা উপজেলা বরাবরই আমের জন্য বিখ্যাত। এ অঞ্চল থেকে যত আম বাইরে যায় তার সিংহভাগই দেবহাটা উপজেলার। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এবছরই আম গাছে ফলন বাড়াতে ইতিমধ্যে আম গাছের পরিচর্যা করা শুরু হয়ে গেছে। বর্তমানে কিছু কিছু আমগাছগুলোতে মুকুলে ভরে যেতে শুরু করেছে। নানা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে আমের মুকুলও। আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মৌমাছির দল গুন গুন শব্দে, মনের আনন্দে আহরণ করে মধু। মৌমাছির এ গুন গুন সুরও কেড়ে নেয় অনেক প্রকৃতি প্রেমীর মন। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস আন্দোলিত করে তুলছে মানুষের মন। এখন থেকেই গাছে মুকুল দেখা দিতে শুরু করেছে। এখন সময়ের ব্যবধানে তা আরো বাড়ছে। এ বছর গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি। আমচাষী এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে আমচাষিরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। দেবহাটা উপজেলার প্রায় সব এলাকাতেই রয়েছে আমবাগান। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই আম বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। তবে গড়ে ওঠা নতুন আম বাগানগুলোর প্রায়ই বনেদি জাতের। এ অঞ্চলে বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, গোবিন্দ ভোগ, ফজলি, হিমসাগর, আ¤্রপালি, কাঁচা মিঠা জাতেরই গাছ বেশি হয়। দেবহাটা উপজেলার টাউনশ্রীপুর, কামটা, দেবহাটা সদর, সুশীলগাতী এলাকায় আম বাগানের সংখ্যা বেশি। এই এলাকার বিশিষ্ট আম ব্যবসায়ী ঝন্টু দে জানান, এ বছরের আবহাওয়া আমের জন্য অনুকূলে রয়েছে। গত বছরের চেয়ে টানা শীত ও কুয়াশার তীব্রতা এবছর অনেক কম। গতবারের মতো মৌসুমের শুরুতে শিলাবৃষ্টিও হয়নি। তিনি বলেন, এর মধ্যে অনেক গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে, ফাল্গুনের মধ্যে উপজেলার আম গাছগুলোতে পর্যাপ্ত মুকুল আসবে। পরিস্থিতি অনূকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া আরো অনেক আমচাষীরা জানান, কৃষি অফিসারদের পরামর্শে গাছে মুকুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই তারা পুরো গাছ সাইপারম্যাক্সিন ও কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক দিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করে গাছ ধুয়ে দিয়েছেন। এতে গাছে বাস করা হপার বা শোষকজাতীয় পোকাসহ অন্যান্য পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যদি সঠিক সময়ে হপার বা শোষক পোকা দমন করা না যায় তাহলে আমের ফলন কমে যাবে বলে জানান তারা। তাই আশা করা যায়, এবছর বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে আর এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।