দেশের খবর: জাতিসংঘ বলছে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৭০ সালের পরই হয়তো আর দেখা যাবে না এই বাঘ।
সোমবার নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকায় সুন্দরবন চিরতরে বিলীন হয়ে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা স্থলভাগের প্রায় ১০ লাখ উদ্ভিদ ও প্রাণীর মধ্যে আছে বিগ ক্যাটস। বাঘ, সিংহ, জাগুয়ার, চিতা ও পাহাড়ি চিতার মতো হিংস্র প্রাণীগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে সবই বিগ ক্যাটস প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। রয়েল বেঙ্গল টাইগারও রয়েছে এ তালিকায়। বাংলাদেশ ও ভারতের চার হাজার কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবনে বাস করে এই বাঘেরা।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনটির উৎস গত ফেব্রুয়ারিতে সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্টে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধ। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলীয় গবেষকদের ওই নিবন্ধে বলা হয়, সমুদ্রসীমা থেকে সুন্দরবনের ৭০ ভাগই মাত্র কয়েক ফুট উঁচুতে। বিশ্বে তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেই অস্তিত্ব সংকটে পড়বে রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেলের প্রতিবেদনে গবেষণা তথ্যের বরাতে বলা হয়, বাংলাদেশের মালিকানাধীন সুন্দরবনে থাকা রয়েল বেঙ্গল টাইগার ২০৭০ সালের মধ্যেই বিলুপ্ত হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনে উদ্ভিদ ও প্রাণীর ওপর প্রভাব নিয়ে এটিই জাতিসংঘের সবচেয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন। ১৫০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৩২ দেশ। বিস্তারিত প্রতিবেদনটি চলতি বছরই প্রকাশ করা হবে।
২০১০ সালে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাগরের উচ্চতা ১১ ইঞ্চি বাড়লেই সুন্দরবনের ৯৬ শতাংশ বাঘই কয়েক দশকের মধ্যে বিলুপ্ত হতে পারে। বিশ্নেষকরা বলছেন, সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা কমছেই। বর্তমানে সুন্দরবনে বাংলাদেশের অংশে ৪৪০টির মতো বাঘ রয়েছে।