খেলার খবর: একটা সময় ছিল যখন ভারতীয় ক্রিকেট দল রাজনীতির আখড়া হয়ে উঠেছিল। পরে অবশ্য ‘প্রিন্স অব কলকাতা’ খ্যাত ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর নেতৃত্বে রাজনীতির নাগপাশ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। শোনা যাচ্ছে, সেই ভূত নাকি আবারও ফিরে এসেছে ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলে।
নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় ভারত। এই হারের পর এমন তথ্যই ফাঁস হয়ে গেছে।
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ভারত দলে তীব্র হয়েছে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। একটা গোষ্ঠী শাসক শিবির অর্থাৎ বিরাট কোহলির, আর একটি বিরোধী শিবির রোহিত শর্মার।
বিশ্বকাপের দল নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যেই উঠে গিয়েছে প্রশ্ন। ইংল্যান্ডে থাকা সত্ত্বেও শিখর ধাওয়ান পরিবর্তে কেন অজিঙ্ক রাহানেকে চাওয়া হল না? বা চার নম্বরে কোন যুক্তিতে অম্বাতি রায়াডুর জায়গায় সুযোগ পান বিজয় শঙ্কর বা ঋষভ পন্থ? সেমিফাইনালে ১৮ রানে ভারতের হারের পর বিস্ফোরক তথ্য চলে এসেছে প্রকাশ্যে। দলের অন্দরের খবর, অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের মধ্যে বনিবনা নেই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ টিম ইন্ডিয়া। রোহিত শর্মার গোষ্ঠীর লোকেরা মনে করছেন, কোচ ও অধিনায়ক মর্জি মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যেমন, অম্বাতি রায়াডুর জায়গায় নেওয়া হয়েছিল বিজয় শঙ্করকে।
গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, অধিনায়ক কোহলির কাছের লোকেদেরই বেশি সুযোগ দেওয়া হয়। ব্যর্থ হলেও তারা দল থেকে বাদ পড়ছেন না। মূল কথা হলো- অধিনায়ককে তেল দিয়ে চলতে হবে। বিরোধী হলেও রোহিত শর্মা ও জসপ্রীত বুমরার পারফরম্যান্স ভালো থাকায় টিকে রয়েছেন তারা। স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়ক ও কোচের বিরাগভাজনরা চলে যাচ্ছেন রোহিত শর্মার শিবিরে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কোচ রবি শাস্ত্রী ও বোলিং কোচ ভরত অরুণকে নিয়ে নাখোশ অধিকাংশ ক্রিকেটার। ২০১৭ সালে অনিল কুম্বলে যাওয়ার পর কোচ হয়েছিলেন শাস্ত্রী। দলে এমনটা একটা পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছেন কোচ ও অধিনায়ক, যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ টুঁ শব্দ করতে পারছেন না। সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেই স্থান হারাবার ভয় পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসক কমিটির প্রধান বিনোদ রাইয়ের সমর্থনও পাচ্ছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এতে সাপের পাঁচ পা দেখেছেন বিরাট কোহলি। তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত দলে। ক্রিকেটারদের একাংশ মনে করছে, কোচ ও অধিনায়কের প্রিয়পাত্র হলেই ঠাঁই মিলবে। সেটাই পছন্দ না টিম ইন্ডিয়ার সহ-অধিনায়ক রোহিত শর্মার। আর সেমিফাইনালে রোহিতের কান্নার দৃশ্যটা কেই বা ভুলতে পারে।
উল্লেখ্য, ভারত হারের পর থেকে আলোচনা আর সমালোচনা চলছেই। পরাজয়ের তিক্ত হতাশা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ভারতীয় সমর্থকরা। চোখে জল নিয়ে রান আউট হয়ে ধোনির প্যাভিলিয়নে ফেরার সেই দৃশ্য এখনও দেশবাসীর মনে কাঁটার মতো বিঁধছে। আর সর্বশেষ বিষয়টি নিয়ে মুখ খলছেন ভারতীয় দলের কোচ রবি শাস্ত্রী।
তিনি ৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পরেও কেন ধোনিকে ৭ নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠানো হলো তারা জবাব দিয়েছেন সম্প্রতি।