দেশের খবর: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। দেশ থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় সংক্রান্ত যে নালিশ করা হয়েছে সে বিষয়টি একটি চক্রান্ত ও উদ্দেশ্যমূলক।
প্রিয়া সাহা নামে বাংলাদেশের এক নাগরিকের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে করা নালিশের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনে গিয়ে প্রিয়া সাহার বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বরার্ট মিলার।
গত বুধবার ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার বিভিন্ন দেশের ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে ১৬টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। তখন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।
ওই সাক্ষাৎকালে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলা প্রিয়া সাহার বক্তব্য ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ওই ভিডিওতে প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলছেন- ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান গুম (ডিসঅ্যাপেয়ার) হয়েছেন। দয়া করে আমাদের লোকজনকে রক্ষা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।’
এরপর তিনি বলেন, ‘এখন সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি।’
ভিডিওতে দেখা যায়, একটা পর্যায়ে ট্রাম্প নিজেই সহানুভূতিশীলতার স্বরূপ এই নারীর সঙ্গে হাত মেলান।
‘কারা এমন নিপীড়ন চালাচ্ছে?’- ট্রাম্পের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘দেশটির মুসলিম মৌলবাদীরা এসব করছে। তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পাচ্ছে।’
এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, এ বিষয়গুলো আমি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জেনেছি। প্রিয়া সাহা আমাদের সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদকদের একজন। কিন্তু তিনি যে আমেরিকা গেছেন, এ সর্ম্পকে আমরা কিন্তু সাংগঠনিকভাবে কিছু জানি না।
‘আমাদের সংগঠন থেকে অফিসিয়ালি আমরা তিন জনকে মনোনয়ন দিয়ে পাঠিয়েছিলাম। তাদের মধ্যে আমাদের সংগঠনের উপদেষ্টা অশোক বড়ুয়া, সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্মল রোজারিও এবং সংগঠনের যুগ্ম সেক্রেটারী নির্মল চ্যাটার্জি। আমরা বলতে চাই, প্রিয়া সাহাকে কে নিয়েছে, কারা নিয়েছে তা আমরা জানি না।’
‘তবে যতটুকু শুনেছি বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে যারা গিয়েছেন তাদের মধ্যে যারা ভুক্তভোগী, এমন কিছু লোককে তারা সিলেক্ট করে ট্রাম্পের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। মাস দুয়েক আগে প্রিয়া সাহার বিশাল বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্ভবত ভুক্তভোগী হিসেবে প্রিয়া সাহাকে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার সংগঠন থেকে তাকে পাঠানো হয়নি।’