বাবুল আক্তার, পাইকগাছা: পাইকগাছায় পোদা ও গয়সা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় ৬টি মৌজার ২টি স্লুইচ গেটের পানি সরবরাহের পথ বন্ধ করে দিয়েছে অবৈধ ইজারাদাররা। ফলে অতি বর্ষণে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘা জমি। ভেসে গেছে লাখ লাখ টাকার মাছ। এলাকাবাসী অবৈধ ইজারা বাতিলের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছে।
জানা যায়, উপজেলার লতা ইউনিয়নে পোদা ও গয়সা নদী অবস্থিত। যার আয়তন ৭৪ একর। এ নদীর দু’প্রান্তে ২টি সরকারি স্লুইচ গেট। যা দিয়ে ৬টি মৌজার হাজার হাজার বিঘা জমির পানি সরবরাহ হয়ে আসছিল। চলতি বছর উন্মুক্ত এ নদীকে বদ্ধ জলাশয় দেখিয়ে নেট-পাটা ও বাঁধ দিয়ে চিংড়ি চাষ করা হচ্ছে। এর ফলে পানি সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। অভিযোগে দেখা যায়, জেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে গত ২৪/০৪/২০১৯ তারিখে কয়রা উপজেলার গড়েরডাঙ্গা মিলনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি প্রদীপ রায় উন্মুক্ত নদী বদ্ধ দেখিয়ে ১৪২৬-১৪২৮ সাল পর্যন্ত ইজারা নেয়। সমিতির সভাপতি প্রদীপ রায় ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে লতা গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল বারিক সরদারের ছেলে বাবুল সরদার ও নয়ন এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ আনারুল ইসলাম সহ ৪ জনের নামে সাব-লীজ প্রদান করেন। সাব-লীজ গ্রহিতারা সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী উন্মুক্ত নদীতে বাঁধ, নেট-পাটা দিয়ে চিংড়ি চাষ করছে। নদীর উপর নির্মাণ করছে ৫/৬ টি দোকান। অবৈধভাবে নেট-পাটা, বাঁধ ও দোকানঘর নির্মাণ বন্ধের জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বার বার নিষেধ করার স্বত্ত্বেও তারা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখে। ফলে এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে তিনি দ্রুত তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলিয়া সুকায়না ঘটনাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদনের জন্য লতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে পাঠালে তাদের তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। এদিকে, এলাকাবাসী পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ইজারা বাতিল ও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
পাইকগাছায় পোদা ও গয়সা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, পানি সরবরাহের পথ বন্ধ
পূর্ববর্তী পোস্ট