বিনোদন সংবাদ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের কারণে দুর্নীতিগ্রস্ত, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, সন্ত্রাসী, টেন্ডারবাজির কাজে অভিযুক্ত মন্ত্রী-এমপিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে ধরা পড়েছেন অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ক্যাসিনোর বেশ কজন মালিক। যারা বেশ প্রভাবশালী।
সে অভিযানের ধাক্কা এসে লেগেছে সিনেমা পাড়াতেও। বাতাসে বেড়াচ্ছে বেশ কিছু চলচ্চিত্র অভিনেত্রীদের নাম। যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দুর্নীতিবাজ নেতাদের জন্য নানা রকম অবৈধ কাজ করেছেন।
গেল ১৮ তারিখ থেকে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ক্যাসিনোতে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে ধরা পড়েছেন ক্যাসিনো মালিকরা। ক্যাসিনো মালিক ও টেন্ডারবাজ জি কে শামীম গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, টেন্ডার পেতে চলচ্চিত্রের নায়িকাদের ব্যবহার করতেন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো নায়িকার নাম প্রকাশ না করা হলেও চলচ্চিত্র পাড়ায় কানাঘুঁষায় উঠে এসেছে বেশ কয়েকটি নাম। তাতে এসময়ের তিনজন নায়িকাসহ সিনিয়র একজন নায়িকার এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা ছড়াতে থাকে। উঠে আসে বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী রত্না, এ প্রজন্মের নায়িকা মিষ্টি জান্নাত, রাহা তানহা খান ও শিরিন শীলার নাম।
এই চার নায়িকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দেশের এক খ্যাতনামা অনলাইন পোর্টালের সঙ্গে কথা বলেছেন। আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, তারা কেউ জি কে শামীম নামে কাউকে চেনেন না।
মিষ্টি জান্নাত অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। সংবাদের প্রতিবেদনের বিষয়টি অসত্য দাবি করে তিনি বলেন, এরকম ভুয়া ও বানোয়াট প্রতিবেদন তৈরি করে আমাদের ক্ষতি করাটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমাকে প্রুভ দেখাতে না পারলে আমি আইসিটি আইনে প্রতিবেদকের নামে মামলা করব। লিগ্যাল হলে তো অবশ্যই আমি সাধুবাদ জানাবো। কিন্তু ওই প্রতিবেদক আমাকে বলেছেন যে ভিডিও আছে, কিন্তু সে সেই ভিডিও দেখাতে না পারলে আমি লিগ্যাল অ্যাকশন নিয়ে নেব। আমি আজ ‘মানবজবিন’ পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলব। আমি অভিযোগকারীদের বলব, আপনারা যদি ভালো মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে দয়া করে ভিডিওসহ প্রমাণ দিন। আর যদি না দিতে পারেন তাহলে আমি তখন অ্যাকশন নেবো।’
মডেল ও অভিনেত্রী রাহা তানহা খানের মতে, ‘আসলে সাংবাদিকদের এভাবে এই সংবাদ কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়া প্রকাশ করার নিয়ম নেই। যে লোকটিকে আমি চিনতাম না সেই লোকটি আমার নাম বললো আর আমার নামে সংবাদ ক্লু দিয়ে প্রকাশ করলেন তা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। দয়া করে অযথা এই ধরণের বিভ্রান্তমূলক সংবাদ প্রকাশ করবেন না।
রাহা বারবার ‘ভাই’ সম্মোধন করে সংবাদ প্রকাশে করতে নিষেধ করেন। তবে আটক ক্যাসিনো মালিক ও টেন্ডারবাজ জি কে শামীমকে চেনেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।
রত্না বলেন, ‘প্রতিবেদনে আমার নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে তাদের বর্ণনা আমার সঙ্গে মিলে যায়। তাই আপনিসহ অনেকে মনে করছেন আমি সেই নায়িকা। তবে এসব বিষয়ে আমি কখনই জড়িত ছিলাম না। আর এমন কোনও বিষয়ে আমি জানিও না। আমি জি কে শামীম নামে কাউকে চিনি না।
রত্না আরও বলেন, প্রকাশিত প্রতিবেদনে যাদের নাম ইঙ্গিত করা হয়েছে তাদেরও উচিত এটা নিয়ে স্টেটমেন্ট দেওয়া, যদি তারা সৎ থাকেন। তাতে করে তদন্তে সত্যটা বেরিয়ে আসবে।
অন্যদিকে শিরিন শিলার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এর আগে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া র্যাবের হাতে আটক হওয়ার পর তার ফোনে বেশ কিছু অভিনেত্রী ও মডেলের ফোন নম্বর পাওয়া যায়। এ খবর প্রকাশের পর থেকে শোবিজ অঙ্গনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়াও, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতারের হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে অন্তত ৫০ জন মডেল ও নায়িকার তথ্য দিয়েছে জি কে শামীম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।