নিজস্ব প্রতিবেদক: দুই বছর আগে গঠিত সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ কেবলমাত্র উপজেলা পর্যায়ের কমিটি ভাঙ্গাগড়া ও বেচাকেনার কাজ করেছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকের যোগসাজশে নানা ধরনের সুবিধা নিয়ে এসব কমিটি ভাঙ্গাগড়ার কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইউনিটে বিবাহিত, অছাত্র ও মাদকাসক্তদের দিয়ে কমিটি করার একাধিক অভিযোগ তারা নিজেরাই বহুবার করেছেন, এমনকি কেন্দ্রে আলাদাভাবে লিখিতও দিয়েছেন পরস্পরের বরেুদ্ধে।
উল্লেখ্য যে, আজ ৪ ডিসেম্বর রেজাউল ইসলাম -সাদিকুর নেতৃত্বাধীন কমিটির সেক্রটারি সৈয়দ সাদিকুর রহমানকে গঠণতন্ত্র বিরোধী কাজে লিপ্ত থাকায় তাকে কেন্দ্র বহিস্কার করেছে। একই সাথে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে সাতক্ষীরায় জেলায় কলারোয়া উপজেলা, সদর উপজেলা, সাতক্ষীরা পৌর ও সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। এ ছাড়া অপর যেসব উপজেলায় কমিটি রয়েছে তারাও দুই-একদফা ভাঙা-গড়ার পর বর্তমান অবস্থায় এসেছে। অভিযোগ রয়েছে গঠনকালে এসব কমিটির নেতাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়েছে। পরে নতুন কমিটি দিয়ে আরও আরও টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া চলছিল। শুধু টাকা নয় এর সাথে থাকতো চিংড়ি, ভেটকি, রুই, পারসে, ভাঙান মাছের বড় বড় উপঢৌকন। সাথে রয়েছে সুন্দরবনের হরিণের মাংস এবং মধুও।
এবিষয়ে একাধিক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, রেজা-সাদিক কমিটি দুই বছরে জেলার কোথাও কোনো ইউনিটের সম্মেলন করেনি। এমনকি একটি দিনে জন্যও সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের কোন মিটিং আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়নি। রেজা-সাদিক খেয়াল-খুশী মতো হাতে লেখা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে তারা কমিটি ভেঙেছেন এবং গড়েছেন। এর আগে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে দেয় তিন সদস্যের রেজা-সাদিক কমিটি। অভিযোগ ওঠে ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন দুই শীর্ষ নেতা এই কমিটি দিয়েছিল।
জেলায় বর্তমানে যেসব কমিটি রয়েছে তার সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে রয়েছেন তালা উপজেলায় শেখ সাদী ও মশিউর রহমান সুমন, আশাশুনিতে আসমাউল হোসেন ও সৌরভ রায়হান সাদ, দেবহাটায় সাইফুর রহমান সুমন ও এএইচ সোহাগ, কালিগঞ্জ উপজেলায় কাজী নুর আহমেদ রনি ও ফিরোজ শাহরিয়ার এবং শ্যামনগরে সাগর মন্ডল ও মোস্তাফিজুর রহমান রনি।
নেতাকমীরা জানান, এসব কমিটি গঠনে রেজা ও সাদিকুর নগদ টাকা নিয়েছেন। ফের কমিটি গঠনের চেষ্টাও করছিলেন তারা। রেজা-সাদিক কমিটি তাদের খেয়াল মতো কলারোয়ার শেখ সাগর হোসেন ও মেহেদি হাসান নাইস, তার আগে এসএম সাঈদ ও শাকিল খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ভেঙে দেয়। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান শোভন ও আরিফুর রহমান শিমুল নেতৃত্বাধীন সাতক্ষীরা পৌর কমিটি, আবুল কালাম ও শাহেদ পারভেজ ইমন নেতৃত্বাধীন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ কমিটি এবং শাহিন আলম সাদ্দাম ও ফজলে রাব্বি শাওন নেতৃত্বাধীন সদর উপজেলা কমিটি ভেঙে দেয় রেজা- সাদিক নেতৃত্ব।
তবে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা দাবি করেন, তিনি কমিটি ভাঙাগড়া নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কারও সাথে কোনো প্রকার লেনদেন করেন নি। এ অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তিনি বলেন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটি ভাঙা হয়েছে। তিনি এ প্রসঙ্গে অন্য কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজী হননি।
পূর্ববর্তী পোস্ট