দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে শিরোপার দৌড় চলছে। এগিয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদই। তবে শীর্ষে ওঠার সুযোগ পেয়েছিল বার্সেলোনাও। লুইস এনরিকের দল সেটি হাতছাড়া করেছে মালাগার বিপক্ষে হেরে। শনিবার রাতে মালাগার মাঠ থেকে ২-০ গোলে হেরে ফিরেছে কাতালান ক্লাবটি।
মাদ্রিদ ডার্বিতে অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে আগের ম্যাচে ড্র করে দুই পয়েন্ট হারিয়েছে রিয়াল। তাতে জিনেদিন জিদানের দলের হাসি মিইয়ে এসেছিল নিশ্চিত। পরের ম্যাচে বার্সা হেরে সেই হাসি কেবল ফিরিয়েই দিল না, বার্নাব্যুর দলটির মুখে এখন আরো চওড়া হাসি। তাদের শনিবারের সকালটা হয়েছিল দুই পয়েন্ট এগিয়ে থাকার মধ্য দিয়ে। এখন রাত হচ্ছে বার্সার থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে থাকার হিসাবে। তার ওপর কাতালানদের থেকে এক ম্যাচ কম খেলেছে লস ব্লাঙ্কোসরা। আবার মৌসুমের দ্বিতীয় এল ক্ল্যাসিকোও বাকি।
বার্সাকে পেলে অন্যরকম হয়ে যায় মালাগা। শক্তির বিচারে যোজন ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বার্সাকে লিগের প্রথম পর্বে ন্যু ক্যাম্পে গোলশূন্য ড্র করতে বাধ্য করেছিল দলটি। দুদলের মুখোমুখি লড়াইয়ের গত কয়েক ম্যাচের ফলেও আছে সেটার প্রভাব। এনরিকে ২০১৫ সালে কাতালান ক্লাবটির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ছয়বারের দেখায় মালাগার বিপক্ষে জিততে পারলেন মাত্র দুটি ম্যাচে।
চলতি লিগে এখন পর্যন্ত ৩১ রাউন্ড খেলেছে বার্সা। যার মাত্র দুটি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে নিতে ব্যর্থ মেসি-নেইমাররা। দুটিই আবার মালাগার বিপক্ষে। তার ওপর শেষ তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচের দুটিতেই হারল এনরিকের শিষ্যরা। গত মাসে দেপোর্তিভো লা করুনার মাঠ থেকে ২-১ গোলে হারার তিক্ত স্বাদ নিয়ে ফিরেছিল।
লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে রক্ষণাত্মক কৌশল নিয়ে নেমেছিল মালাগা। ম্যাচের ১৬ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে জর্ডি আলবার বাড়ানো বলটি যদি বক্সে ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জাল খুঁজে নিতে পারতেন সুয়ারেজ, তাতে হিসাব অন্যরকমই হতে পারত। সেটি হয়নি স্বাগতিক গোলরক্ষক কামেনি দেয়াল হয়ে দাঁড়ানোয়।
দুজনকে কাটিয়ে মেসি ম্যাচের ৩০ মিনিটের সময় যে আক্রমণটি শানিয়েছিলেন, আন্দ্রে গোমেজ তাতে শেষ আঁচড় দিতে পারলেও এগিয়ে যেত অতিথিরা। সেটি তো হয়ইনি, উল্টো পাল্টা আক্রমণে ৩২ মিনিটে এগিয়ে যায় মালাগাই। হুয়ান কার্লোসের বাড়ানো বলে জাল খুঁজে নেন বার্সারই সাবেক প্রোডাক্ট সান্দ্রো।
মধ্যবিরতির পরপরই রক্ষণাত্মক মালাগার আরেকটি পাল্টা আক্রমণে মিডফিল্ডার হুয়ানপি জালে শট নিতে পারলে বিপদ বাড়ত অতিথিদের। অবশ্য ৬৬ মিনিটে গোলের থেকেও বড় ধাক্কা খায় বার্সা। এসময় ডিয়েগো লরেন্তেকে অকারণে বাজেভাবে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নেইমার।
সেই ধাক্কা সামলে নিতে পারেনি বার্সা। তার ওপর ৭৮ মিনিটে সার্জিও রবের্তো ফাউলের শিকার হলেও নিশ্চিত একটি পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি রেফারি। বার্সা তারপরের সময়টুকু আরো মরিয়া হয়ে খেলেছে। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে সুয়ারেজের আরেকটি প্রচেষ্টায় দেয়াল হয়ে দাঁড়ান সেই গোলরক্ষক কামেনি। তবে যোগ করা সময়ে জোনাথন রদ্রিগেজ আরেকবার জালে বল জড়ালে বার্সেলোনার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে যায়।
এই হারে বার্সেলোনা ৩১ ম্যাচে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকল। অ্যাটলেটিকোর সঙ্গে ড্র করে ৩০ ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রিয়াল। আর ৩১ ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে অ্যাটলেটিকো।