দেশের খবর: প্রশাসনে উপসচিব পদে পদোন্নতি দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেছে। ইতিমধ্যে প্রশাসন ক্যাডারবহির্ভূত অন্যান্য ক্যাডার থেকে যারা অপশন দিয়ে প্রশাসন পুলে আসতে চান তাদেরও তথ্য চাওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, এবার নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে ২৭তম ব্যাচকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় নেয়া হবে।
এই ব্যাচের ২৮৮ জন কর্মকর্তার মধ্যে ১৬৩ জন সিনিয়র স্কেল পেয়েছেন ২০১৪ সালের ১ জুন। উপসচিব পদে পদোন্নতি যোগ্যতার শর্ত হিসেবে তাদের ইতিমধ্যে সিনিয়র স্কেলে ৫ বছর চাকরি পার হয়েছে। কিন্তু ব্যাচের অবশিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে ৩৬ জন সিনিয়র স্কেল পান ২০১৫ সালের ২৩ মার্চ।
তাদের ৫ বছর পূর্ণ হবে আগামী মাসে। যদিও ইতঃপূর্বে কখনও সিনিয়র স্কেল পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী ধাপে পদোন্নতি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার নজির নেই। সেদিক থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ বড় একটি অগ্রগতি।
ব্যাচটির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, ইতিমধ্যে যাদের সিনিয়র স্কেলে ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তারা পদোন্নতির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ে দেখা-সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু ব্যাচটি না ভেঙে একত্রে পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে মতামতের পাল্লা ভারি হওয়ায় সবার মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, প্রশাসন ক্যাডারের সিনিয়র ব্যাচের কর্মকর্তারা কখনও এভাবে সঠিক সময়ে উপসচিব হওয়ার সুযোগ পাননি।
১৯৮২, ৮৪ ও ৮৫ ও ৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তারা চাকরিজীবনের ১৭-১৮ বছরে গিয়ে উপসচিব হতে পেরেছেন। সিনিয়র সহকারী সচিব পদে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করার পরও তারা পদোন্নতির দেখা পাননি।
সে ক্ষেত্রে ২৭তম ব্যাচ সৌভাগ্যবান। তারা যথাসময়ে পদোন্নতির দেখা পেতে যাচ্ছেন। তাদের একটি বড় অংশ চাকরিতে যোগ দেন ২০০৮ সালের ১২ নভেম্বর। অবশিষ্ট কর্মকর্তারা পর্যায়ক্রমে যোগ দেন। এ হিসেবে আগামী এপ্রিলে তাদের পদোন্নতি হলে তারা চাকরির এক যুগ পূর্তির আগেই উপসচিব হতে পারবেন।
সর্বশেষ উপসচিব পদে ২৭৩ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয় ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর। নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে তাদের মধ্য থেকে ১৫০ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়।
বাকিরা ছিলেন লেফটআউট। ওই সময় ২৫তম ব্যাচের বেশ কিছুসংখ্যক যোগ্য কর্মকর্তাসহ আগের লেফটআউট তালিকার অনেকে পুনরায় বঞ্চিত হন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল- যারা পদোন্নতি পাননি তাদের প্রত্যেকের সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে।
ফলে এবারও পদোন্নতি বিবেচনার সময় লেফটআউট কর্মকর্তাদের বিষয়টি যেমন সামনে আসবে, তেমনি ২৭তম ব্যাচের কারও কারও মধ্যে পদোন্নতি না পাওয়ার শঙ্কা তো থাকছেই। এ ছাড়া অতীতে যারা উপসচিব হতে পারেননি আসন্ন পদোন্নতিকে ঘিরে তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সঙ্গত কারণে একটু বেশিই হবে।
তাদের কয়েকজনজানিয়েছেন, পদোন্নতি বিধিমালা অনুযায়ী যেসব যোগ্যতা-দক্ষতার ভিত্তিতে পদোন্নতি দেয়া হয়, তা যদি তাদের থাকে তাহলে তাদেরকে যেন বিশেষভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়। বর্তমানে ইতিবাচক ধারায় অগ্রসরমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক মহলের কাছে তারা অন্তত এ প্রত্যাশাটুকু করতে চান।
এদিকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশী কর্মকর্তারা চান, এ যাত্রায় তাদের বিষয়টিও বিবেচনা করা হোক।
এ জন্য ১৮তম ব্যাচের প্রভাবশালী কয়েকজন কর্মকর্তা ইতিমধ্যে নানামুখী প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তবে এখনও এ বিষয়ে নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সর্বশেষ যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয় গত বছর ১৯ জুন। এদিন নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে ১৭ ব্যাচকে বিবেচনায় নিয়ে মোট ১৩৬ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়।