দেশের খবর: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) আগামী রোববারের (২৩ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে ১০০০ কোটি টাকা জমা দেবে গ্রামীণফোন। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) গ্রামীণফোনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের আইনি পদ্ধতিকে সম্মান করে। তবে বিটিআরসি গ্রামীণফোনের ওপর যে চাপ প্রয়োগ করেছে, সে বিষয়ে আদালতের সুরক্ষা প্রত্যাশা করছে তারা।
আগামী সোমবারের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনেকে (বিটিআরসি) পাওনা বাবদ এক হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির যে পাওনা টাকা সেটা কমানোরা কোনো সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে তাদের আগামী সোমবারের মধ্যে অন্তত এক হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। বাকি টাকার বিষয়ে ওইদিন পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে।
কোর্টের রায়ের পর বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, টাকা না দিয়ে গ্রামীণফোনের যাওয়ার আর কোনো জায়গা আছে বলে আমি মনে করি না। সে কারণে আমার যতখানি মনে হয় এবার তারা টাকাটা দিয়ে দেবে।’
আর টাকা না দিলে আইনানুসারে সোমবারের পর তারা গ্রামীণফোনে প্রশাসক নিয়োগের আয়োজন শুরু করবেন বলেও জানান।
এর আগে বিটিআরসির করা অডিটে গ্রামীণফোনের কাছে তারা মোট ১২ হাজার ৫৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা হিসেবে দাবি করে বিটিআরসি। এর মধ্যে বিটিআরসির অংশ ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি আর এনবিআরের অংশ ৪ হাজার ৮৬ কোটি টাকা।
বিটিআরসির পাওনা দাবিকৃত ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকার মধ্যে মূল টাকা হলো ২ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। বাকি ৬ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা-ই বিলম্ব ফি, যেটি মূল টাকার ওপর চক্রবৃদ্ধি হারে হিসেব করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসি এ পাওনা দাবি করলে আদালতে যায় গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। পরে আপিল বিভাগ গত ২৪ নভেম্বর গ্রামীণ ফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশেধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সেজন্য তাদের দেওয়া হয়েছিল তিন মাস সময়, যা ২৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে।
ওই সময় শেষ হওয়ার আগে বিটিআরসিকে ১০০ কোটি টাকা দিয়ে আলোচনা চালু রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল গ্রামীণফোন। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাতে রাজি হয়নি বলে বুধবার জানান গ্রামীণফোনের হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত।
সে বিষয়টি তুলে ধরে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে রিভিউ শুনানিতে ছয় মাসের কিস্তিতে ওই দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু শুনানি শেষে আদালত সোমবারের মধ্যে এক হাজার টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে বিষয়টি সেদিনই পরবর্তী আদেশের জন্য রাখেন।