দেশের খবর: দেশে নতুন করে ৪১৪ জনের দেহে নভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এতে দেশে শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে গেল। এদিকে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন করে ৪১৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এতে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪ হাজার ১৮৬ জনে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৭ জনে।
এদিকে আগে থেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা আরও ১৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১০৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিভিন্ন দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার ৪৫ দিন পরের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এই সময়ে আক্রান্ত হয় ৩ হাজার ৭৭২ জন এবং মারা যায় ১২০ জন। একই সময়ে ইতালিতে আক্রান্ত হয় প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার এবং মৃত্যুবরণ করে প্রায় ১১ হাজার। স্পেনে একই সময়ে আক্রান্ত হয় ১ লাখ এবং মৃত্যুবরণ করে ১০ হাজার। যুক্তরাষ্ট্রে ৪৫ দিনে আক্রান্ত হয় ১ লাখ ২০ হাজার এবং মৃত্যুবরণ করে প্রায় ২৪ হাজার।
তিনি বলেন, ‘এই তুলনামূলক চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাই বাংলাদেশে অবস্থান অনেক ভালো।’
ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিন শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন- এ তথ্য উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যারা ভারত ও সিঙ্গাপু থেকে দেশে ফিরে আসছেন এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আগামীতেও আসবেন, তাদের অবশ্যই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
ভিআইপিদের জন্য আলাদা হাসপাতাল তৈরির খবর সঠিক নয় উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, সরকার এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা করেনি। সবার জন্য একই হাসপাতাল এবং একই ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তররের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মোট ২১টি প্রতিষ্ঠানে মোট ৩ হাজার ৪১৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্ত ৪ হাজার ১৮৬ জনের ৮৫ দশমিক ২৬ শতাংশই ঢাকা সিটি ও ঢাকা বিভাগের মধ্যে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতেই আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক, ৪৫ দশমিক ৫১ শতাংশ।
মারা যাওয়া সাতজন সম্পর্কে তথ্য জানিয়ে ডা. নাসিমা বলেন, সাতজনের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও দুইজন নারী। এরা সবাই ঢাকার।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সিস্টেম সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (সিএসএসই) তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫৯ জনের। আর বিশ্বে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩১৪ জনে। আর ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭ লাখ ১৪ হাজার ১৯৫ জন।