দেশের খবর : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আরো ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২ হাজার ৯২৮ জনে। এসময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৭৫ জন। এ নিয়ে আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৫৩। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৭৯২ জন, এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ২৩ হাজার ৮৮২ জন।
রোববার (২৬ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত নিয়মিত বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
এদিকে দেশে করোনা পরীক্ষার ল্যাবের সংখ্যা বাড়লেও নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৮১টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১০ হাজার ৪৪১টি, নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৭৮টি। এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ১১ হাজার ৫৫৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ২৭৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩১ শতাংশ।
নাসিমা সুলতানা জানান, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪০ জন পুরুষ এবং ১৪ জন নারী। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৩০৬ জন এবং নারী ৬২২ জন।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ জন, রংপুর বিভাগে ৩ জন, বরিশাল বিভাগে একজন, রাজশাহী বিভাগে ৭ জন, সিলেট বিভাগে ৬ জন এবং খুলনা বিভাগে ৮ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৪৮ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬৬৭ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ১৩২ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৩৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ২৮ হাজার ৯৪ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৪৭ হাজার ২২৬ জনকে।
তিনি আরো জানান, প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৮৫ জনকে। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার ৫৪৬ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৬ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪৬ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৮ হাজার ৭৯৯ জন।
দেশে গত ৮ মার্চ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা রোববার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৪৮ হাজার ৫৯০ জনে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে বিশ্বের এক কোটি ৬২ লাখ ১২ হাজার ৮৯৫ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ জন চিকিৎসাধীন এবং ৬৬ হাজার ১৮২ জন (১ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।