অনলাইন ডেস্ক : ধর্ষণ ও মাদকসহ ডজন মামলার আসামী সিরিয়াল র্যাপিস্ট আইয়ুব আলী (৪০) কে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার পুলিশ তাকে আরও একটি ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আইয়ুব আলী পৌরসভার রসুলপুর কদমতলা এলাকার মৃত সাহেব আলীর ছেলে। তার গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় স্বস্তির নি:শ্বাস পড়েছে। পাশাপাশি নির্যাতিত একাধিক পরিবার পুলিশ সুপারের নিকট লিখিতভাবে অভিযোগ করে শাস্তির দাবি করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, গত ৩ আগস্ট দুপুরে সাতক্ষীরা শহর উপকণ্ঠের রসুলপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার জনৈক বাসিন্দা তার স্ত্রীকে নিয়ে একই এলাকায় খালাতো বোনের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানে খাওয়া দাওয়া শেষে রাত বেশি হওয়ায় খালাতো বোনের বাড়িতে রাতে অবস্থান করেন তারা। ৪ আগস্ট গভীর রাত আনুমানিক দুইটার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে খালাতো বোন ঘরের বাইরে আসলে পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা সিরিয়াল র্যাপিস্ট আইয়ুব আলী ওই ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে ঘরের মধ্যে থাকা অতিথি নববধুকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। তার ডাক চিৎকারে স্বামীর ঘুম ভেঙে যায়। পরিস্থিতি বুঝে সিরিয়াল র্যাপিস্ট দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিদ্যুতের আলোতে বাড়ির সকলে সিরিয়াল র্যাপিস্ট আইয়ুব আলীকে চিনে ফেলে।
এঘটনায় নির্যাতিত নববধুর স্বামী বাদি হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় আইয়ুব আলীকে ১নং আসামী করে এজাহার দাখিল করে। পুলিশ দ- বিধির ৯(৪)(খ) ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টার অপরাধে মামলা রেকর্ড করে। মামলা নং ৩৭। এরআগে ওই গৃহবধুকে পাশাপাশি বাড়ি হওয়ার সুবাদে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল আইয়ুব আলী। তবে সোমবার মামলা হওয়ার পর গ্রেপ্তারকৃত আইয়ুব আলীর সন্ত্রাসী বাহিনী বাদিকে নানাভাবে হুমকী ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ইতোমধ্যে তিনি ও তার পরিবার জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন।
অপরদিকে সদর উপজেলার থানাঘাটা গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে হাসান সিদ্দিকী লাবু রোববার পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করে বলেছেন, আইয়ুব আলী এলাকার ত্রাস সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। কদমতলা বাজারে তার ডাক্তারী চেম্বার আছে। সেখানে যেয়ে বিভিন্ন সময় চাঁদাদাবী ও আদায় করে থাকে। চাঁদা না দেওয়ায় মারপিট করারও অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে তার ভয়ে চেম্বারে রোগি দেখতে না পেরে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করেছেন তিনি। পাশাপাশি রসুলপুর গ্রামের শেখ সিরাজুল ইসলাম পুলিশ সুপারের নিকট আরও একটি অভিযোগ করে আইয়ুব আলীর ত্রাসের রাজত্ব থেকে এলাকাবাসীর মুক্তির দাবী করেছেন। তিনি বলেছেন, তার বাড়ির মহিলাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো বাজে মন্তব্য করা এলাকার বিভিন্ন নারীদের নির্যাতন করায় চরম আতঙ্কে এলাকার নারী সমাজ।
এব্যাপারে সাতক্ষীরা আদালত ইন্সপেক্টর অমল রায় জানান, আলোচিত আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, পর্ণগ্রাফী ও মাদকের ডজন খানিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এসব মামলায় সে জামিনে ছিল। এরপরও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে শুনেছি।
সার্বিক বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সিরিয়াল র্যাপিস্ট আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য মামলা। অভিযোগ রয়েছে সহ¯্রাধিক। নতুন করে বিভিন্নভাবে নির্যাতিত মানুষ অভিযোগ করছেন। ফের মামলাও হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে নির্যাতিত কেউ মামলা করতে চাইলে আমাদের কাছে আসলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।