অনলাইন ডেস্ক : যশোরের নাভারন থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীনের কাছে ঋণ চাওয়া হয়েছে।
‘কন্সট্রাকশন অব নিউ বিজি ট্র্যাক ফর্ম নাভারন টু সাতক্ষীরা’ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৩২৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা চীনের কাছে থেকে ঋণ আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩৩২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
চলতি সময় থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পটি নির্মাণ করা হবে। নাভারন থেকে মুন্সীগঞ্জ গ্যারেজ পর্যন্ত রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৯৮ দশমিক ৪২ কিলোমিটার। ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দবিহীন নতুন প্রকল্প তালিকায় এটা রাখা হচ্ছে। বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তির জন্য প্রকল্পটি ইংরেজি সংস্করণ করা হবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে ট্রেনে চড়ে যাওয়া যাবে মুন্সীগঞ্জ পয়েন্টে। সেখান থেকে একটা নদী পার হলেই সুন্দরবন। সুন্দরবনের উদ্ভিদ ও প্রাণী বৈচিত্র্যের কথা চিন্তা করেই ১০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত ট্রেন যাবে।
নাভারন থেকে মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত থাকবে ৮টি স্টেশন। এগুলো হলো- নাভারন, বাগআচড়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা, পারুলিয়া, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর ও মুন্সীগঞ্জ। নাভারন থেকে বাগআচড়া স্টেশনের দূরত্ব ১২ দশমিক ৪ কিলোমিটার, বাগআচড়া থেকে কলারোয়া ১২ দশমিক ৬৮, কলারোয়া থেকে সাতক্ষীরা ১৪ দশমিক ২৩, সাতক্ষীরা থেকে পারুলিয়া ১৫ দশমিক ১১, পারুলিয়া থেকে কালিগঞ্জ ১৮ দশমিক ৩৭, কালিগঞ্জ থেকে শ্যামনগর ১৩ দশমিক ৮২ ও শ্যামনগর থেকে মুন্সীগঞ্জ স্টেশনের দূরত্ব হবে ১১ দশমিক ৮১ কিলোমিটার।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান আ ন ম আজিজুল হক বলেন, সুন্দরবনের সঙ্গে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ প্রাথমিক অবস্থায় আছে। নাভারন থেকে সাতক্ষীরা হয়ে মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা গেলে অর্থনৈতিকভাবে এলাকাগুলো শক্তিশালী হবে।
তিনি বলেন, নতুন রেলপথ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রেলপথটি নির্মাণে চীনসহ কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগী খোঁজা হচ্ছে। সুবিধা মতো যার সঙ্গে মিলবে তাকেই এই প্রকল্পের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জেলা সাতক্ষীরা। সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ২২ লাখ মানুষের বসবাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি সম্পদ এবং ভারত-বাংলাদেশ আমদানি-রপ্তানি (ভোমরা স্থলবন্দর) বাণিজ্য অর্থনৈতিকভাবে ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এসব কারণে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে একমাত্র সড়কপথটি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখানে রেলপথ নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। রেলপথের সেতু নির্মিত হবে বাঁকাল, লাবণ্যবতী, সাপমারা খাল ও কাকশিয়ালী নদীর ওপর।
পূর্ববর্তী পোস্ট