নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ থেকে সরকারি চেক বইয়ের চুরি হওয়া ৩টি পাতার একটি পাতায় ৬লাখ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসএম খলিলুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে গত ২৯ জুলাই দ: বিধির ৪০৬/৪২০ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংক লি: সাতক্ষীরা শাখায় জেলা পরিষদ এর নামে ২৮১৮২০০০৬১২৩২ নং একটি হিসাব পরিচালিত হয়ে আসছিল। যা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান জেলা পরিষদ এর যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হয়। উক্ত হিসাবের বিপরীতে যাবতীয় চেক বই ও কাগজপত্র হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবু হুরাইয়া সংরক্ষণ করে থাকেন। গত ২৭ আগস্ট উক্ত হিসাবের বিপরিতে জনৈক আবুল হোসেন নামীয় ব্যক্তির পক্ষে ৬ লাখ ১০ হাজার টাকার একটি চেক ব্যাংকে উপস্থাপন করেন। কিন্তু চেকে থাকা স্বাক্ষর দেখে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। পাশাপাশি চেকটি জেলা পরিষদ থেকে ইস্যু করা হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপনকারি ব্যক্তি এরই মধ্যে সটকে পড়েন।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, উক্ত হিসাবের বিপরিতে চ.হি. গঙ/৫০ নম্বর চেক বইয়ের সর্বশেষ ০১৮২৩০০, ০১৮২৩৪৯ ও ০১৮২৩৫০ নম্বরসহ মোট ৩টি পাতা চেক বইতে রক্ষিত নাই। করোনাকালে জেলা পরিষদের কয়েকজন আক্রান্ত হওয়ায় অনিয়মিত অফিস পরিচালিত হওয়ার ফাঁকে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এরপর ২৭ আগস্ট সোনালী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখার সহকারি জেনারেল ম্যানেজার টেলিফোনে জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে অবহিত করার পর বিষয়টি তাদের নজরে আসে।
এরআগে ২৩ জুলাই ০১৮২৩০০ নং চেকের পাতা ব্যাংকে জমা দিয়ে ৬ লক্ষ টাকা অজ্ঞাত ব্যক্তি কর্তৃক উত্তোলন করা হয়েছে। কে বা কারা এই চেকের পাতা চুরি বা টাকা উত্তোলন করতে পারে তা নিয়ে জেলা পরিষদের অভ্যন্তরে বেশ জল্পনা কল্পনা চলছে।
এদিকে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সদর থানার এসআই শেখ হাবিবুর রহমান জানান, মামলা রুজু করার পর তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমাকে নিযুক্ত করে। এরপর আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। চতুরমুখি খোজ খবর অব্যহত আছে। একই সাথে বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়েও গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, অচিরেই এই মামলার তদন্তকার্য সম্পন্ন হবে।
এব্যাপারে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাতে জানান, জেলা পরিষদ থেকে চেকের পাতা চুরি এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের ঘটনায় বাইরের কেউ থাকতে পারে , তবে জেলা পরিষদের ভিতরের কেউ আছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদ থেকে ব্যাংকে প্রেরিত চেকের সাথে প্রদত্ত এ্যাডভাইসও নকল করা হয়েছে। এসব বিষয়ে জেলা পরিষদের অভিজ্ঞ কোন লোক না থাকলে টাকা উঠানো সম্ভব নয়। ঘটনার বিপরিতে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে, ব্যাংক থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করার কাজও চলছে। তবে চেক চুরি ও টাকা উত্তোলনের ঘটনায় চোরেরা রক্ষা পাবেনা বলে তিনি দৃড়তার সাথে জানান।
পূর্ববর্তী পোস্ট