অনলাইন ডেস্ক : ভ্যাকসিনের খবরে মাস্কের প্রতি আগ্রহ কমেছে মানুষের। অথচ করোনা মহামারি থেকে নিরাপদে থাকতে মাস্কের বিকল্প নেই বলে বারবার সতর্ক করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ নিয়ে নতুন নির্দেশনাও দিয়েছে সংস্থাটি। নতুন নির্দেশনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, কোনও নির্দিষ্ট সংখ্যক জনগোষ্ঠী যতদিন ভ্যাকসিন না পাবে, ততদিন মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। সংস্থাটি এও বলেছে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মাস্ক পরাতে হবে না।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে এক হাজার ১৫৩ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৭১৩ জনে। রবিবার (২০ ডিসেম্বর) করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাস্ক বিষয়ক নতুন নির্দেশনায় বলেছে, মাস্ক পরা বা খোলার সময় অবশ্যই হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। চিবুকের কাছে মাস্ক নামিয়ে রাখা যাবে না। পুনরায় ব্যবহার করতে হলে মাস্কটি খুলে একটি পলিব্যাগে রাখতে হবে। আবার হাত বা কবজির পাশে ঝুলিয়েও রাখা যাবে না বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
ডাব্লিউএইচও আরও জানায়, মাস্ক পরেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বাড়িতে আসা অতিথির সঙ্গেও কথা বলার সময় মাস্ক পরতে হবে। কাটা, ছিঁড়ে যাওয়া মাস্ক ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মাস্ক পরার পর মুখের কোনও পাশে যেন ফাঁকা না থাকে সে নিয়েও সতর্কতা দিয়ে সংস্থাটি বলেছে, যদি কোনও কারণে মাস্ক বা মুখের কোনও জায়গা স্পর্শ করতেই হয়, তবে তার পর হাত নিয়মমাফিক পরিষ্কার করে নিতে হবে। কোনও কারণে মাস্ক ভিজে গেলেও তা ফেলে দিতে হবে।
একইভাবে মাস্ক খোলার সময়েও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মাস্ক খুলতে হবে কানের পাশের ফিতে (লুপ) ধরে।
যেসব মাস্ক পুনরায় ব্যবহারযোগ্য, সেগুলো প্রতিদিনই পরিষ্কার করতে হবে। কাপড়ের মাস্ক দিনে অন্তত একবার সাবান-পানি অথবা ডিটারজেন্ট দিয়ে গরম পানিতে ধুতে হবে, অথবা দশমিক এক শতাংশ ক্লোরিন মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে এক মিনিটের মতো রেখে পরে স্বাভাবিক পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।
পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের মাস্ক পরানোর প্রয়োজন নেই জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে মাস্কে এ শিশুদের ক্ষতি হতে পারে। ছয় থকে ১১ বছরের শিশুদেরকে বড়দের উপস্থিতিতে মাস্ক পরাতে হবে। ১২ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকেই মাস্ক পরতে হবে বলে বাধ্যবাধকতা দিয়েছে সংস্থাটি।
মাস্কের ওপর মনোযোগ বাড়ানো উচিত জানিয়ে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভালো মাস্ক তৈরির জন্য দেশে গবেষণা হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, কোনও কিছু সহজে পাওয়া গেলে তার গুরুত্ব কমে যায়। মাস্ক দিয়েতো কেবল করোনাভাইরাস নয়, শীতের সময় অনেক অ্যাজমা রোগীও ধুলার হাত থেকে বাঁচতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান খসরু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে খুব আগ্রহ জন্মেছে। কিন্তু মাস্ক ছাড়া ভ্যাকসিনকে অসম্পূর্ণ বলা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অন্তত ৯০ শতাংশ মানুষের ভ্যাকসিন লাগবে, যা রীতিমতো অসম্ভব। আবার ভ্যাকসিন যে দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা দেবে তা-ও নয়। তাই আগামী দুই থেকে তিন বছর মাস্ক এবং হাতধোয়াসহ যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধিকে জীবনাচারের অংশ বানিয়ে ফেলতে হবে।