লা লিগার শিরোপা জিততে হলে কেবল প্রতি ম্যাচে জিতলেই চলবে না বার্সেলোনার। অপেক্ষায় থাকতে হবে রিয়ালের একটি হারেরও। তবে নিজেদের কাজটা তো ঠিকঠাক করে রাখতে হবে আগে। নেইমারের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে সেটাই আরেকবার করে রাখল কাতালানরা। লাস পালমাসকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে শিরোপার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল বার্সা।
রোববার রাতে পালমাসকে গুঁড়িয়ে ৩৭ ম্যাচে ৮৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেই থাকল লুইস এনরিকের দল। একই সময়ে নিজেদের মাঠে ৪-১ গোলের একই ব্যবধানে সেভিয়াকে উড়িয়ে দিয়েছে রিয়াল। ৩৬ ম্যাচে বার্সার সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে দ্বিতীয় স্থানে লস ব্লাঙ্কোসরা। তাদের হাতে আছে দুটি ম্যাচ। আর বার্সার বাকী একটি। মেসি-নেইমারদের তাই শেষ ম্যাচে জয়ের পাশাপাশি রিয়ালের একটি হার কামনা অপরিহার্য!
ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ওয়ার্মআপের সময় ডান পায়ে চোট নিয়ে ছিটকে পড়া হাভিয়ের মাশ্চেরানোকে ছাড়াই নামতে হয়েছিল বার্সাকে। সার্জিও রবের্তো ও জেরার্ড পিকেও ছিলেন না। দুর্বল ডিফেন্সে মৌসুমজুড়ে ভোগা বার্সা ডিফেন্ডার সঙ্কটের মাঝে লা লিগা অভিষেক করিয়ে দেয় ব্রাজিলের ২১ বছর বয়সী মার্লনকে।
ম্যাচে শুরু হতে হতে অবশ্য সব ভুলে আক্রমণে গেছে বার্সাই। তিন মিনিটের মাথায় ইনিয়েস্তার পাস মেসি ঠিকমত পায়ে লাগাতে পারলে শুরুতেই লিড নিতে পারত অতিথিরা। এর মিনিট তিনেক পর মেসির ‘দুর্লভ’ হেড একটুর জন্য বার মিস করে।
সুযোগ হাতছাড়ার মহড়া স্বত্বেও কাঙ্ক্ষিত গোল আদায় করে নিতে বেশি সময় নেয়নি কাতালানরা। ম্যাচের ২৫ মিনিটে নেইমারকে দিয়ে প্রথম গোলটি করিয়েছেন সুয়ারেজ। ইনিয়েস্তার থেকে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে সামনে গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট নেননি উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড। ডি-বক্সে থাকা নেইমারের দিকে বল বাড়ান তিনি। তা থেকে গোল না করতে পারলে নিজের নামের প্রতিই অবিচার করতেন ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারবয়।
প্রথম গোলের দুই মিনিট পরেই সুয়ারেজকে দিয়ে গোল করিয়ে ঋণ শোধ করেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান তারকার বুদ্ধিদীপ্ত পাসে বল পেয়ে পালমাস গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে ভলি করে জালে জড়িয়ে দেন সুয়ারেজ।
লাস পালমাসও চেষ্টা চালিয়ে গেছে গোল শোধের। ম্যাচের ৩২ মিনিটে মেসার মাটি ঘেঁষা শট কোন রকমে বাঁচান বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগেন।
প্রথমার্ধ শেষের চার মিনিট আগে অল্পের জন্য জোড়া গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন নেইমার। মেসির ফ্লিক ঠিক মতো পায়ে লাগাতে পারেননি তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে বেশ আক্রমণাত্নক হয়ে খেলেছে লাস পালমাস। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে স্বাগতিক দলের মিচেলের শট গোললইন থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন উমতিতি।
ম্যাচের ৫৫ মিনিটে গোল পেতে পারতেন মেসিও। আর্জেন্টাইন অধিনায়কের বুলেট গতির শট প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করলে বঞ্চিত হন চলতি লেগের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
টের স্টেগেন দক্ষতায় ৬০ মিনিটে আবারও গোলবঞ্চিত হয় লাস পালমাস। এসময় রদ্রিগেজের নিচু শট দক্ষতার সাথে ফিরিয়ে দিয়েছেন জার্মান গোলরক্ষক।
তবে এর মিনিট তিনেক পরে দলকে গোল খাওয়া থেকে বাঁচাতে পারেননি টের স্টেগেনও। কেভিন প্রিন্স বোয়াটাংয়ের পাস থেকে বল পেয়ে আলতো ছোঁয়ায় বার্সা গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন পেদ্রো বিগাস।
স্বাগতিকদের গোল আনন্দ নিমিষেই মিইয়ে গেছে নেইমারের জোড়া গোলে। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ইভান রাকিটিচের থেকে বাতাসে ভেসে আসা পাসে মাথা ছুঁয়ে জাল খুঁজে নেন নেইমার।
দ্বিতীয় গোলের চার মিনিট পর নিজের হ্যাটট্রিকও পূর্ণ করেন এই ব্রাজিলিয়ান। গোলের যোগানদাতা জর্ডি আলবার পাস থেকে বল পেয়ে আলতো খোঁচায় স্বাগতিক গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। বড় জয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সাও।