বিদেশের খবর : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগের দাবি তুলে চালু হওয়া হ্যাশট্যাগ দেওয়া কয়েক হাজার পোস্ট আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ‘নির্দেশে’ তারা এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে ‘ভুলবশত’ ওই হ্যাশট্যাগ আটকে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
ভারতে করোনা সঙ্কট যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এবং তার প্রকোপে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করেছেন সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ। ব্যর্থতার দায় নিয়ে মোদিকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে বলে দাবি তুলে নেটমাধ্যমে #রিজাইনমোদি লিখে পোস্ট করছেন তারা।
বুধবার সকাল থেকে টুইটার এবং ফেসবুকে অন্যতম জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগ হিসেবে উঠে এসেছিল সেটি। বৃহস্পতিবার সকালেও টুইটারের হ্যাশট্যাগের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে এই #রিজাইনমোদি।
কিন্তু বুধবার বেশ কিছুক্ষণের জন্য ফেসবুক ওই হ্যাশট্যাগ বন্ধ করে দেয়। #রিজাইনমোদি দিয়ে কিছু লেখা পোস্ট করতে গেলেই সেটি ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে বলে বার্তা ভেসে ওঠে। শুধু তাই নয়, ওই হ্যাশট্যাগ দেওয়া সমস্ত পোস্টও সরিয়ে নেওয়া হয়।
বলা হয়, ওই হ্যাশট্যাগ ফেসবুকের নীতির পরিপন্থী। এর জেরে বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য ওই হ্যাশট্যাগ দেওয়া কোনো লেখা পড়া যাচ্ছিল না। অবশ্য শুধু ভারতের ক্ষেত্রেই ওই হ্যাশট্যাগ আটকে দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ব্রিটেনের মানুষ তা পড়তে পারছিলেন।
এ নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসতে শুরু করলে ফেসবুকের বিরুদ্ধে সরব হন নেটিজেনরা। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘নির্দেশে’ ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করেন তারা। অনেকে ফেসবুক বয়কট করার ডাকও দেন। তার পরই প্রায় ঘণ্টা তিনেক পর ওই হ্যাশট্যাগ দেওয়া লেখা ফের নজরে আসতে শুরু করে।
এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে ফেসবুকের মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, ভুলবশত সাময়িকভাবে ওই হ্যাশট্যাগ আটকে দেওয়া হয়েছিল। তবে তা ভারত সরকারের তরফে নির্দেশ এসেছিল বলে নয়। সেটি আবার চালু করে দিয়েছি আমরা।’
কিন্তু ফেসবুকের এই দাবিও টিকছে না অনেকের কাছেই। কারণ মহামারি পরিস্থিতিতে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার মোদি সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে এমন লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তুলে নেওয়া হল। এর আগে, কোভিড সঙ্কট সামাল দেওয়ায় সরকারি ব্যর্থতা নিয়ে মুখ খোলায় পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী মালয় ঘটক, সাংসদ রেবানাথ রেড্ডি, অভিনেতা বিনীতকুমার সিংহ, চিত্র নির্মাতা বিনোদ কাপরি এবং অবিনাশ দাসের হ্যান্ডলের মতো একাধিক বিশিষ্ট মানুষের টুইট তুলে নেওয়া হয়।
এর আগে, গত ২২ এবং ২৩ এপ্রিল ওই টুইটগুলি নিষিদ্ধ করতে টুইটার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। সেই মতো পদক্ষেপ করেন মাইক্রোব্লগিং সাইট কর্তৃপক্ষ। আনন্দবাজারের প্রতিবেদন