দেশের খবর: সদ্য পদত্যাগ করা সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান দেশ ছেড়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে দেশ ছাড়ার উদ্দেশে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করেন।
এরপর এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে রাতেই তিনি বিমানবন্দর ছেড়ে গেছেন বলে গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আগে থেকে বুকিং করা টিকিটে রাত ১১টা ২০মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের বিকে ৫৮৫৮ নম্বর ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কানাডার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। মুরাদ হাসান দুবাই হয়ে কানাডার টরন্টোয় পৌঁছবেন।
এর আগে রাত ৯টা ২০ মিনিটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ রজনীগন্ধায় ডা. মুরাদ হাসানকে দেখতে পাওয়া ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘উনি এয়ারপোর্টে আশার পর পরই আমরা তাকে অনুসরণ করি। এরপর বিভিন্ন সংস্থাকে বিষয়টি জানাই। বিশেষ করে উনার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কি না- তা যাচাইবাছাই করা হয়। যদিও তাৎক্ষানিভাবে এ ধরনের কিছু পাওয়া যায়নি।’
মুরাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হলেও তার দেশত্যাগে কোনো বাধা নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, মুরাদ হাসান বিদেশে যেতে চাইলে সরকার বাধা দেবে না। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুরাদ হাসান বিদেশে যাবেন কি না- সেটা তার সিদ্ধান্ত। এখানে আমাদের কিছু করার নাই। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় তিনি যেকোনো দেশে যেতে পারেন।
নারীর প্রতি অশ্লীল ও আপত্তিকর মন্তব্য করায় তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারান ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান।
ফেসবুকে এক লাইভ অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়েকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্য করেন তিনি।
এরপরই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়। সেখানে মাহির সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন তিনি। এমনকি মাহিকে ধর্ষণ এবং উঠিয়ে আনার হুমকি দেন। সে সময় চিত্রনায়িকাকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। তখন ফোনে চিত্রনায়ক ইমনকে প্রতিমন্ত্রী বলছিলেন, ঘাড় ধরে যেন মাহিকে তার কাছে নিয়ে যান।
সেই অডিও ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন মুরাদ হাসান। পরে তাকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ৭ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। ওইদিন রাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।
একই দিন সন্ধ্যায় জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে জেলা আওয়ামী লীগ। ওই সুপারিশ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে পাঠানো হয়।