নিজস্ব প্রতিনিধি: বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মন্টু গাইন ওরফে মন্টু দালাল। সাতক্ষীরা সদরের সীমান্ত এলাকায় এক মূর্তমান আতঙ্কের নাম মন্টু। সে কয়রা উপজেলার চাঁদখালী এলাকার সিরাজ গাইনের ছেলে। খুলনা, পাইকগাছা ও কয়রা থানায় তার নামে রয়েছে একাধিক মামলা। মামলার হাত থেকে নিজেকে আড়াল করতে কয়রা এলাকা থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে আসা মন্টু গাইন এখন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বকচরা-মেহেদীবাগ এলাকায় ভাড়া করা বাসায় বসবাস করে। এখানেই শেষ নয়। তার তিন তিনটি বিয়ে করা বউ আছে। আছে মাহফুজা নামের একজন দেহ পসারিনীও। প্রথম স্ত্রী কয়রা এলাকায় থাকলেও এখন থাকে বিদেশে। তার একটি ছেলে। দ্বিতীয় স্ত্রী (মেয়ের মা) এককন্যা সন্তানের জননীকে বিয়ে করলেও পরবর্তিতে সেই পালিত কন্যাকেও বিয়ে করেছে বলে জনশ্রুতি আছে। তৃতীয় স্ত্রী সদর উপজেলার বকচরা-মেহেদীবাগ এলাকার কামাল হোসেনের মেয়ে। বর্তমানে কয়রার এই মন্টু গাইন সাতক্ষীরায় বিয়ের সুবাদে বাসা ভাড়া নিয়ে এমন কোন কাজ নেই যা সে করেনা। প্রথমে মাদকদ্রব্য চোরাচালানী কাজে জড়িত থাকলেও এখন সে মাদকের গডফাদার।
তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও মাদক ব্যবসা, চোরাকারবারীদের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের সোর্স পরিচয়ে থাকা সাতক্ষীরা শহরের সার্কিট হাউজ মোড়, জেলা পরিষদ মোড়, বকচরা, কদমতলা, আবাদের হাট, বাঁশদহা,
বৈকারী, কুশখালী এলাকায় সে চিিহ্নত দালাল হিসেবে কাজ করে। মাঝে মাঝে তার কাছে থাকে পুলিশের হ্যান্ডকাপ। যা সাধারণ মানুষকে হয়রানী করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। একাধিক মামলার আসামী হয়েও সে পুলিশের সাথে মিশে থাকে। মূলত, সোর্স পরিচয়ে থাকায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে সে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারন মানুষ এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। দিন দিন সীমান্ত এলাকায় দালালদের উৎপাত বেড়েই চলেছে। অসহায় মানুষদের প্রতি অত্যাচারের মাত্রা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। চাঁদা না দিলে কিংবা কথা না শুনলে মামলায় জড়ানোর হুমকিও দিয়ে বেড়ায় মন্টু দালাল। প্রতিমাসে এলাকার আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে মাদক, সন্ত্রাস নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও মন্টু দালালদের মত আসামীরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ নিয়ে সীমান্ত এলাকার মানুষের মনে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীরা জানায়, মন্টু বিভিন্ন সময় এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রকাশ্যে বলে বেড়ায় ইয়াবার মামলায় ঢুকিয়ে দেবো। এসব দালালদের কারনে সদর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন অপরাধী গ্রেফতারে পুলিশ মাঝেমধ্যে মন্টুদের মত মানুষের সহযোগিতা নেয়। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মন্টুর মতো সোর্সরা চালিয়ে যায় তাদের মূল কাজ। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই, যা মন্টু নিয়ন্ত্রণ করছে না। আবার কখনও কখনও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়েও মন্টু নিরপরাধ মানুষের অর্থকড়ি হাতিয়ে নেয়। সীমান্ত এলাকার পাড়া-মহল্লায় এখন আতঙ্কের নাম পুলিশের সোর্স মন্টু দালাল। কুশখালী এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, মন্টুর মত সোর্সরা এলাকায় পুলিশের চেয়েও বেশি ক্ষমতার দাপট দেখায়। এরা মানুষের সঙ্গে যা ইচ্ছা তাই ব্যবহার করে।
সূত্র জানায়, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম(বার) সোর্সদের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থানে আছে। তবে সুযোগ বুঝে মন্টু দালাল অপকর্ম করে বেড়ায়। মানুষকে হুমকি ধামকি দেওয়া থেকে শুরু করে পুলিশের নামে ভয় ভীতি দেখায়। এতে করে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি জানান, আমি তাকে চিনিনা। পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। কোথাও পুলিশের নাম ব্যবহার করে হয়রানি করেছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট