নিজস্ব প্রতিনিধি : শ্যামনগরে অন্তস্বত্ত্বা প্রথম স্ত্রীর চেকআপের নামে লাইসেন্স বিহীন ক্লিনিকে ভর্তি করে স্ত্রীকে হত্যার পর ক্লিনিক মালিক ও পাষান্ড স্বামী কর্তৃক শ্যালক ও শ^শুরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন, শ্যামনগর উপজেলার পাশের্^খালী গ্রামের মোমিন আলী সরদারের স্ত্রী হালিমা খাতুন।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে আমার মেঝ কন্যা শামিরন খাতুন সাবিনার সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বাগেরহাট জেলার রামপাল গ্রামের আহম্মদ শিকারীর পুত্র জাহাঙ্গীর শিকারীর সাথে বিবাহ হয়। বিবাহের পর প্রায়ই জামাতা কন্যাকে নির্যাতন করে আসছিল।
এঘটনায় আমার কন্যা শামিরন খাতুন সাবিনা ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। যার নং-৩০৪। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অন্তস্বত্ত্বা অবস্থায় জাহাঙ্গীর শিকারীকে তালাক প্রদান করে সাবিনা। তাদের ৯ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে।
কিন্তু অন্তস্বত্ত্বা হওয়ার ফলে জাহাঙ্গীর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে মিমাংসার দাবি জানালে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তাদের পুনরায় বিবাহ প্রদান করা হয়। সে সময় থেকে কন্যা আমাদের বাড়িতে অবস্থান করছিলো। এরপর গত ১৩ মে ২০২২ তারিখ সকালে আমার কন্যার শারিরীক চেকআপের নামে টেংরাখালী গ্রামের দাউদ আলীর পুত্র মিকাইলের বাড়িতে ডাকে। পরে কন্যাকে নিয়ে শ্যামনগরের হায়বাতপুর গ্রামের শেখ মেহের আলীর পুত্র শেখ আহছান হাবিব এর মালিকানাধীন লাইসেন্স বিহীন পল্লী প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সেখানে ক্লিনিক মালিক এর যোগসাজসে আমাদের কাউকে না জানিয়ে জাহাঙ্গীর কন্যার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটানোর চেস্টা করে। এতে প্রচুর রক্তক্ষননে সাবিনা সংকটাপন্ন হলে ওই ক্লিনিকের জনৈক নার্স রিংকু আমাকে ফোনে জানালে দ্রুত সেখানে এসে দেখি আমার কন্যা মৃত প্রায়। দ্রুত সেখান থেকে তাকে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসার পথে অন্তস্বত্বা কন্যার মৃত্যু হয়। এঘটনায় পূর্ব পরিকল্পিকভাবে জাহাঙ্গীর এবং লাইসেন্স বিহীন অবৈধ ক্লিনিক মালিক শেখ আহছান হাবিব আমার স্বামী ও পুত্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করে।
ওই মামলায় স্বামী ও পুত্র জেল হাজতও খেটেছে। সন্তান হারালাম আমি, আবার আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে হয়রানি করা হলো। এছাড়া শ্যামনগর থানায় তাদের মামলাটি রেকর্ড হয়। আমার মামলাটি রেকর্ড নাগওয়ায় পরবর্তীতে আমি সাতক্ষীরা আমলী আদালতে মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং সি আর ২৮৭/২২। জাহাঙ্গীর শিকারী প্রকৃতপক্ষে বনদস্যু ছিলো। তিনি একজন সন্তান হারা মা হিসেবে ওই ডাকাত জাহাঙ্গীর এবং অবৈধ ক্লিনিক মালিক শেখ আহছান হাবিবের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।