নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরা ও দেবহাটা উপজেলার সীমান্তবর্তী লাবণ্যবতী খালের উপর কাঠের ব্রিজটি যেন মৃত্যুর ফাঁদ।যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা।তাতে জীবনও বিপন্ন হতে পারে মনে করেন স্থানীয়রা। কতৃপক্ষের অযত্ন আর অবহেলায় ব্রিজটির বিভিন্ন স্থানে কাঠের পাটাতন ভেঙে জর্জরিত হয়ে পড়েলেও তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।তাতে বিঘ্নিত হচ্ছে দুটি উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের লাখেরও অধিক লোকের যাতায়াত ব্যবস্থা।তাছাড়া শ্রীরামপুর কলেজ, সরকারি প্রাইমারি স্কুল, কুলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে ।
স্থানীয় বাসিন্দা বয়োবৃদ্ধ নুর ইসলাম জানান, শুনেছি শ্রীরামপুর-কুলিয়া গ্রামকে একত্রিত করা কাঠের ব্রিজটি ঠিক করবে।কিন্তু সেটিতো ২০ বছর হয়ে গেল। এখানো ঠিক হলো না।আমি জানি না আমার জীবদ্দশায় ব্রিজটি ঠিক দেখে যেতে পারবো কি না? তবে আশায় আছি।
তিনি আরও বলেন, ব্রিজটি দিয়ে ভোমরা স্থলবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন শ্রেণির শ্রমিক, ব্যাবসায়ীসহ স্কুল-কলেজে পড়াশুনারত শিক্ষার্থীরা পারাপার হয়।কিন্তু ব্রিজটি ভগ্ন ও ভেঙে পড়ায় তাদের যাতায়াত দারুণ ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। তিনি দাবি করেন ব্রিজটি নতুন ভাবে নির্মাণ করে জনগণের যাতায়াত ব্যবস্থাটি নিরাপদ করার।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শ্রীরামপুর বাজারে ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, দেবহাটা উপজেলার কুলিয়ায় বাড়ি হলেও আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সদর উপজেলার শ্রীরামপুর বাজারে। আমার দিনরাত যেকোনো সময় আসা-যাওয়ার একমাত্র পথ এই ব্রিজটি।কিন্তু সেটি জরাজীর্ণ ও ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। কতৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমনটি হয়েছে তার দাবি।
শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন,আমি ও আমার বন্ধুদের স্কুলে আসা-যাওয়ার ব্রিজটি মিলা দিন ভেঙে গেছে। এখনো কেউ ঠিক করে দেয়নি।আমরা একটা ভালো ব্রিজ চায়।তা না হলে আমরা সময়মতো স্কুলে আসতে পারবো না।
স্থানীয় ভোমরা ইউপির ৪ নম্বার ওয়ার্ড সদস্য মো.নেছার উল্লাহ বলেন,ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিভিন্ন সময় ব্রিজটি মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।কিন্তু তদারকির অভাবে ব্রিজটি আবার ভগ্ন হয়ে ভেঙে পড়েছে।জরাজীর্ণ ব্রিজের দু’ধারে লোহার অ্যাঙ্গেল দিয়ে জনগণের পথ আটকানো থাকলেও ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছে লাবণ্যবতী খালের দু’ধারের বাসিন্দারা।স্বাধীনতা পরবর্তী নির্মিত ব্রিজটি সাতক্ষীরা সদর ও দেবহাটা উপজেলার সীমান্তবর্তী মানুষের পারাপারের একমাত্র অবলম্বন।দুহাজার সালের বন্যায় ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে আবারও সংস্কার করা হয়।তিনি জোর দাবি করে বলেন, লাবণ্যবতী খালের উপর নির্মিত কাঠের ব্রিজটি পুনরায় আধুনিক অবকাঠামো দিয়ে নির্মান করা হলে দুই উপজেলার বাসিন্দাদের পারাপারে অনেক উপকার হবে।