কালিগঞ্জ ব্যুরো : কালিগঞ্জে কলেজ ছাত্রী অপহরণের ৭ দিন পর উপ-পরিদর্শক সুধাংশু শেখর হালদার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরার রসুলপুরের ভাড়াটিয়া হাবিবুর রহমানের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে। অপহরণে সহায়তাকারী মটর সাইকেল চালককে শনিবার দিবাগত ভোরে তার বাড়ি থেকে আটক করার পর তারই সহায়তায় ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণকারি গ্রেফতার হলেও থানা পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। উদ্ধার হওয়া কলেজ ছাত্রীর নাম প্রিয়াঙ্কা মলি¬ক (১৮)। সে উপজেলার কুশুলিয়া ইউনিয়নের চ-িতলা গ্রামের জগন্নাথ মল্লি¬কের মেয়ে ও কুশুুলিয়া স্কুল এ- কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। অপহরণকারি ইসরাফিল হোসেন বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের ছেলে একই কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। কুশুলিয়া চ-ীতলা গ্রামের গোপীনাথ সরদারের ছেলে প্রভাষ সরদার জানান, শরীকদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে তার জামাতা একই গ্রামের জগন্নাথ মল্লি¬ক জেল হাজতে রয়েছে। নাতনি প্রিয়াঙ্কা মল্লিক কালিগঞ্জ উপজেলার কুশুলিয়া স্কুল এ- কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। কলেজে ও প্রাইভেট পড়তে আসা- যাওয়ার পথে ও মোবাইলে ফরিদপুর গ্রামের ইসরাফিল হোসেন তাকে উত্যক্ত করতো। এ নিয়ে তারা কয়েকবার প্রতিবাদ করেও কোন প্রতিকার পাইনি। একপর্যায়ে ১৪ আগষ্ট সকালে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে বাড়ি থেকে কিছুদূর না যেতেই ইসরাফিল হোসেনসহ তার সঙ্গীরা মোটর সাইকেলে করে দুর্বত্তরা প্রিয়ঙ্কাকে অপহরণ করে। বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দ মধুসুধনপুর গ্রামের জমাত আলী গাজীর ছেলে ফিরোজ হোসেন তার মোটর সাইকেলে করে ইসরাফিল ও প্রিয়ঙ্কাকে সাতক্ষীরায় পৌছে দেয় বলে পরবর্তীতে তারা জানতে পারেন। এ ঘটনায় অপহৃতের মা নিভা রানী মল্লি¬ক বাদি হয়ে পর দিন সন্ধ্যায় ইসরাফিল হোসেন, তার বাবা মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সুধাংশু শেখর হালদার জানান, প্রিয়ঙ্কা অপহরণে সহায়তা করার অভিযোগে রোববার ভোর চারটার দিকে উপজেলার মুকুন্দ মধুসুধনপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ফিরোজ হোসেনকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল ট্র্যাকিং করে ফিরোজকে নিয়ে রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরের ভাড়াটিয়া হাবিবুর রহমানের বাসা থেকে ইসরাফিলকে আটক করা হয়েছে। এ সময় উদ্ধার করা হয় অপহ্নত কলেজ ছাত্রী প্রিঙ্কা মল্লিকে। তবে অপহরণের সহযোগিতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লস্কর জায়াদুল হক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ফিরোজ হোসেনকে মুচলেকা নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রিয়াজ উদ্দিনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সকালে ইসরাফিলকে আদালতে পাঠানো হবে। একই সময়ে ভিকটিম প্রিয়াঙ্কাকে ডাক্তারী পরীক্ষা ও জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হবে। কুশুলিয়া ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রিয়ঙ্কাকে ১৬ আগষ্ট বাগেরহাটের নোটারী পাবলিক এসএম রেজাউল করিমের মাধ্যমে ১২৬১ নং এফিডেফিড মুলে ধর্মান্তরিত প্রিয়ঙ্কাকে সাড়ে ১৮ বছর বয়স ও একই বয়সের ইসরাফিলকে সাড়ে ২১ বছর বয়স দেখিয়ে বিবাহ দেখানো হয়। বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রিয়াজউদ্দন জানান, জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ি ইসলাফিলের বয়স সাড়ে ১৮ বছর। সে হিসেবে ইসরাফিল ও প্রিয়ঙ্কা স্বামী স্ত্রী হিসেবে রসুলপুরে বসবাস করছিল। অপহরণে সহায়তাকারি হিসেবে পুলিশ ফিরোজ হোসেনকে আটক করার পর তারই দেওয়া তথ্য মতে ইসরাফিলকে গ্রেফতার করেছে। অপহরণকারী ইসরাফিলকে (জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ি সাড়ে ১৮ বছর) সাড়ে ২১ বছরের সাবাবলক বানিয়ে এফিডেফিডকারি বাগেরহাটের নোটারী পাবলিক এসএম রেজাউল করিমের শাস্তি ও তার লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
কালিগঞ্জে অপহরণের ৭দিন পর কলেজ ছাত্রী উদ্ধার, অপহরণকারী আটক
পূর্ববর্তী পোস্ট