কেএম রেজাউল করিম: নিজের দেশের নাম, জাতির জনকের নাম সঠিক বানানে লিখতে পারেন না প্রশ্ন প্রণেতারা! অথবা লিখতে পারলেও যে নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা প্রয়োজন তা করেন না প্রশ্ন প্রণেতা শিক্ষকবৃন্দ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের বানান তারা লেখেনÑ ‘শেখ মুজিবুর হরমান’ এবং বাংলাদেশ বানান তাদের কাছে ‘বাংলাদেশেল’! প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে শিশুর শিক্ষার মূল ভিত গড়ার সময়। সেই শিক্ষা ব্যবস্থা মনিটরিং-এর দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিরা সে দায়িত্ব পালনে কতটা খামখেয়ালি তার প্রমাণ এসব নি¤œমানের প্রশ্নপত্র।
দেবহাটা উপজেলায় চলতি বছরের চূড়ান্ত মডেল টেস্টের পরীক্ষায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির ভুলে ভরা প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আর এতে করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলার ৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা হতাশ হয়ে পড়েছে।
দেবহাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী চূড়ান্ত মডেল টেস্টের প্রশ্নে বাংলাদেশের নাম ও স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের বানান ভুলসহ অসংখ্য ভুলে ভরা ছিল।
দেবহাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি কর্তৃক পরিচালিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর মডেল টেস্টের “বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়” পরীক্ষার প্রশ্নের প্রথম পাতায় ১ দাগের সঠিক উত্তরে টিক এর ২য় দাগে প্রশ্ন ছিল-বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৭১ সালের মুজিবনগর সরকারের এই পদমর্যদায় কে ছিলেন? সেখানে চারটি উদ্দীপক দিয়ে সঠিক উত্তরে টিক দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সঠিক উত্তর বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথম উদ্দীপক (ক)“ শেখ মুজিবর হরমান,” ৩য় দাগে “বাংলাদেশেল” দেখে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বুঝতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির কাছে একাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়। কিন্তু এরকম একাধিক স্থানে ভুলে ভরা প্রশ্নে কীভাবে পরীক্ষার্থীরা সঠিক উত্তর প্রদান করবে এবং কি বা তারা শিখবে। বর্তমানে সরকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর কথা বললেও কিছু মুষ্টিমেয় ব্যক্তির কারণে ব্যাহত হচ্ছে এই মহতি উদ্যোগ। শুধু তাই নয় ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ের পরীক্ষার প্রশ্নে ভুল হলেও সমাধানের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ সিংহর নিকট জানতে চাইলে ভুলে ভরা প্রশ্নের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমাদের চোখে ভুল ধরা পড়ার সাথে সাথে প্রতিটি কেন্দ্র সংশোধন করে দিয়েছে। আগামীতে যাতে ভুল না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকব।”
এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবক ও সচেতন মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট