রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের যে ১১ অভিযোগ এবং সে বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেটা কি সিনহা প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সম্ভব হবে? হলে কীভাবে? না হলে কখন?
প্রশ্নের উত্তরে দুদকের আইনজীবী খুরসিদ আলম খান বলেন: দুদকের পক্ষে কোন ব্যবস্থা নিতে হলে দুদকের কাছে আগে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ আসতে হবে।
‘ওইরূপ কোন অভিযোগ এলে দুদক সে অভিযোগ খতিয়ে দেখে অভিযোগের সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট এরকম একটি অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে যে তদন্ত দুদককে তা চিঠির মাধ্যমে বন্ধ করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে, দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ নিশ্চিত করেছেন, কোন চিঠিতে দুদক কারো বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করেনি বা রাখেনি।
বিচারপতি জয়নুল অাবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টের চিঠির বিষয়ে গণমাধ্যমের খবরে বারবারই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নাম এসেছে। এখন স্বয়ং প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধেই দুদকের মাধ্যমে তদন্তের ইঙ্গিত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
ছুটিতে বিদেশে যাওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিবৃতি এবং ওই বিবৃতিকে বিভ্রান্তিমূলক উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের বিবৃতির পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রোববার সংবাদ সম্মেলনে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন: যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার প্রায় সবগুলোই এন্টি করাপশন কমিশনের আওতায়। তাহলে আপনারা বুঝতেই পারছেন, কে এটার অনুসন্ধান করবে”
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগের যে দালিলিক তথ্যাদি আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির কাছে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ তুলে ধরেছেন তার মধ্যে আছে: দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলন।
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার সফিক আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্ত করতেই হবে। কারণ যেসব অভিযোগ উঠেছে তা গুরুতর।
‘অভিযোগগুলো যদি প্রমাণিত হয় তাহলে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত,’ বলে মন্তব্য করেন সাবেক আইনমন্ত্রী।
আইন বিশেষজ্ঞ হাফিজুর রহমান কার্জন বেলেন, প্রধান বিচারপতি যদি অসদাচরণ করেন কিংবা মানসিকভাবে অসু্স্থ বা শারীরিকভাবে অসমর্থ হন, অথবা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম, নৈতিক স্খলনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাকে অপসারণ করা যেতে পারে।
‘তবে তদন্ত আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত কার্যক্রম চলতে দিতে হবে।’