ডেস্ক রিপোর্ট : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগের ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন নাহারকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশসহ রুল জারি করেন।
উল্লেখ্য, এই শামসুন নাহার ওয়ান ইলেভেন এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ঘুষের টাকাসহ হাতে-নাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ পরীক্ষা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। পাশাপাশি ৩৬ টি স্কুলের মধ্যে ২৯ স্কুলের দফতরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত। ‘আড়াই কোটি টাকার দুর্নীতি’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করেন দুটি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও একজন চাকরি প্রার্থী।
পরে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী সাজ্জাদ-উল-ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ৩৬ টি স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষার দিনই (৬ সেপ্টেম্বর)পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।এর কারণে নিয়োগ পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী হাজির হয়েছিলো মাত্র এক জন করে। এমনকি অনেক স্কুলের চাকরি প্রার্থী ছিলেন ম্যানেজিং কমিটির আত্মীয়। এসব বিষয় আইনের লংঘন। এটি নিয়ে পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়।
তিনি বলেন, আদালত শিক্ষা কর্মকর্তাকে তলব করে ২৯ স্কুলে দেওয়া নিয়োগ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেছেন। রুলে ৩৬ স্কুলের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে কেন পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন, শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, খুলনার প্রাথমিক শিক্ষার ডিভিশনাল ডেপুটি ডাইরেক্টর, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
পত্রিকার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে নিয়োগের বিপরীতে প্রার্থীদের কাছ থেকে মাথাপ্রতি ৬ লাখ থেকে ৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। এই হিসেবে প্রায় আড়াই কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার ৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অবশিষ্ট ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ করা হবে। এরই মধ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে নিয়োগের কথা বলে নির্ধারিত পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে আগাম টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রার্থী হাবিবুল্লাহ গাজী জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদনও করেছেন।
আশাশুনির ৩৬ প্রাইমারি স্কুলে দপ্তরি নিয়োগ স্থগিত; শিক্ষা কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
পূর্ববর্তী পোস্ট