নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দল আইন অনুযায়ী চলছে কি না খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। এরই অংশ হিসেবে এসব দল নিবন্ধনের শর্ত মানছে কি না তা জানাতে চিঠি দেয়া হয়েছে। বুধবার (১ নভেম্বর) দলগুলোর সাধারণ সম্পদক বা মহাসচিবের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিবন্ধনের শর্তগুলো ঠিকমত মানছে কি না তা জানতে দলগুলোকে চিঠি দিয়েছে। চিঠির জবাব পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে দেখবো। যাচাই-বাছাইয়ের পর কোন দলের শর্ত প্রতিপালনে ব্যত্যয় পাওয়া গেলে ওই দলের নিবন্ধনের বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, নতুন দল নিবন্ধনে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি নিবন্ধিত দলগুলোর বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়ার অংশ হিসেবে এ চিঠি দেয়া হলো।
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো ইসির যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো. আবুল কাসেম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৯০বি এর শর্তাদি প্রতিপালনের শর্তে নিবন্ধন প্রদান করা হয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০এইচ(ডি) অনুযায়ী ৯০(বি) এর দফা(১)(বি) এর কোন বিধান লংঘিত হলে উক্ত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল বলে গণ্য হবে। উক্ত বিধানের প্রতিপালন নিশ্চিতকল্পে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন নীতিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৯ অনুসারে নিবন্ধনের শর্তাদি প্রতিপালন সম্পর্কে কমিশনের অবহিত থাকা প্রয়োজন। চিঠিতে কমিশন সচিবের কাছে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধনের শর্তাদি প্রতিপালনের বিষয়টি অবহিত করতে বলা হয়েছে।
ইসির কর্মকর্তারা আরও জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ অনুচ্ছেদে দলের নিবন্ধন বাতিলের শর্তাদি রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে কোন রাজনৈতিক দল যদি নিজেরাই বিলুপ্ত ঘোষণা করে, সরকার যদি কোন দলকে নিষিদ্ধ করে, দলগুলো যদি কমিশনকে তাদের চাহিদামাফিক তথ্য সরবরাহে ব্যর্থ হয় এবং পর পর দুই টার্ম যদি কোন দল জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে তার নিবন্ধন বাতিল হবে। এ আইন অনুযায়ি, রাজনৈতিক দলগুলোকে ইসিকে তথ্য জানাতে বাধ্য।
প্রসঙ্গত: নির্বাচন কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই ঘোষিত রোডম্যাপে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করছে কী না তার তথ্য অক্টোবর মাসের মধ্যে সংগ্রহের পরিকল্পনা ছিল। এসব তথ্যাদি পর্যালোচনা করে ফেব্রুয়ারি মাসে দলগুলোর নিবন্ধন বহাল রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে রোডম্যাপে উল্লেখ রয়েছে।