অনলাইন ডেস্ক: ভারতীয় সন্ত্রাসী দাউদ মার্চেন্টের মুক্তির খবর জানেন না ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন। নিয়মানুযায়ী এ ধরনের কোন বড় ধরনের সন্ত্রাসীকে মুক্তি দেয়া হলে তা প্রশাসনের গোয়েন্দা ও পুলিশকে জানাতে হয়। এছাড়াও কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও জানানো হয়নি তার মুক্তির খবর। তবে কারা প্রশাসন বলছে, এটা আমাদের দায়িত্ব আমরাই ভালো জানি, কাকে জানাবো আর কাকে জানাবো না।
গতকাল কঠোর গোপনীতার মধ্যে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয় ভারতীয় সন্ত্রাসী আবদুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে। যা আজ সোমবার বিকালে গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করে কারা অধিদপ্তর।
ভারতের বিখ্যাত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজের কর্ণধার গুলশান কুমার হত্যা মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি ছিলেন এই দাউদ মার্চেন্ট। ১৯৯৭ সালের ১২ আগস্ট মুম্বাইয়ে গুলি করে গুলশানকে হত্যা করা হয়। ২০০৯ সালের ২৭ মে তাকে এক সহযোগীসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছিল গোয়েন্দা ডিবি পুলিশ। জাল পাসপোর্ট তৈরি ও অনুপ্রবেশের অভিযোগে তখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, দাউদ অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করছিলেন। ভারতের অপরাধ জগতের আলোচিত ডন দাউদ ইব্রাহিম বাংলাদেশে নিজের কর্মকাণ্ড বিস্তারের জন্য দাউদ মার্চেন্টকে এদেশে পাঠিয়েছেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে দাউদ জামিন পেলে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তির পরপরই তাকে আবার আটক করে পুলিশ। পরে তাকে ৫৪ ধারায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডেও নেয়া হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে দাউদকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে আলোচনা তোলা হলেও বিষয়টি দীর্ঘদিন আটকে থাকে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে মুক্ত করা হয়েছে। তার মুক্তির বিষয়টির প্রশাসনের কোনো গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এই কারা কর্মকর্তা বলেন, এটা আমার দায়িত্ব। কাকে জানাতে হবে আর কাকে জানাতে হবে না, সেটা আমি আপনার থেকে বেশি জানি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম একেএম মঈন উদ্দিন সিদ্দিকী তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।
দাউদ মার্চেন্টের মুক্তির ব্যাপারে কোনো তথ্যই নেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। আজ সোমবার বিকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, দাউদের মুক্তির ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, দাউদ মার্চেন্টের মুক্তির খবর আমি জানি না। আদালতের নির্দেশনানুযায়ী তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের জানানোটা মুখ্য বিষয় নয়।