বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ‘বেত্তমিজ’ সাকিব আল হাসান ‘বেত্তমিজ’ ভারতীয় গণমাধ্যমের গাত্রদাহ ধরনের প্রতিবেদন দেখে অবাক বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীরা। গণমাধ্যম বাংলাদেশের টাইগারগার ‘গালি’ দিয়ে যেন গায়ের ঝাল মিটিয়ে নিচ্ছে। অন্তত ভারতীয় গণমাধ্যম ও সাবেক কয়েকজন ক্রিকেটারের মন্তব্যে এমনটাই মনে হচ্ছে।
হিন্দি ভাষার একটি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি বিশ্লেষণ করতে বসে যেন তারা বাংলাদেশের উপর চড়াও হতে শুরু করে। প্রতিবেদনে সংবাদ প্রেজন্টার এবং নিজস্ব প্রতিবেদকের হিন্দি ভাষায় করা প্রতিবেদন শুনে শুধু হাস্যকরই মনে হবে না, আরও মনে হবে যে পূর্বের কোনো শত্রুতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশকে দোষী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টায় নেমেছে তারা!
গত ১৬ মার্চের শাসরুদ্ধকর ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফির ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি সিরিজের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। শেষ ওভারের নো বল-কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে নিজের দায়টুকু স্বীকার করে নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। একই সাথে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মলনে ফাইনালে ভালো কিছুর প্রত্যাশা করেন তিনি। ১৮ বলে ৪৩ রান করা ইনিংসটি নিজের সেরা ইনিংস বলে জানান জয়ের নায়ক মাহমুদুল্লাহ।
ইসুরু উদানার প্রথম দুই বল বাউন্সার হওয়ার পর টি-টোয়েন্টির নিয়ম অনুযায়ী আম্পায়ারের ‘নো’ বল কল করার কথা। ম্যাচ জেতানোর নায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ লেগ-আম্পায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি ‘নো’ বলের ইঙ্গিত দেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের প্রতিবাদের পর মূল আম্পায়ারের সাথে আলোচনা করে তা তুলে নেন। এ নিয়েই যত বিপত্তি। প্রথম বলটি আম্পায়ার বাউন্সার ডেকেছিলেন কিনা তা নিশ্চিত নয়। প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন মাহমুদউল্লাহ। মাঠের বাইরে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুম ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
বাংলাদেশের মাঠ ছেড়ে উঠে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত উত্তেজনাকর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দলকে অবিস্মরণীয় জয় উপহার দেন মাহমুদউল্লাহ।
রবিবার শিরোপা লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ ভারত। অধিনায়ক সাকিবের সামনে নিষেধাজ্ঞার একটা হুমকি ছিল, তেমনটা হয়নি। আম্পায়ারের ভুল থেকে ঘটনার উৎপত্তি হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড। তাই জরিমানার অঙ্কটাও বেশি হয়নি। সাকিবকে জরিমানার সঙ্গে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।
একাদশের বাইরে থাকা নুরুল হাসান সোহান উত্তেজনার মুহূর্তটিতে লঙ্কান ক্রিকেটারদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ায় তার ওপরও আরোপ করা হয়েছে ম্যাচ ফি’র ২৫ শতাংশ জরিমানা ও একটি ডিমেরিট পয়েন্ট। সাকিব ও সোহান নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেয়ায় আর শুনানির প্রয়োজন পড়েনি। আইসিসির আচরণবিধির লেভেল-১ এর আর্টিক্যাল ২.১.১ (সাকিব) ও ২.১.২ (সোহান) ভঙ্গ করার সর্বোনিম্ন শান্তি খেলোয়াড়কে অফিসিয়াল তিরস্কার। সর্বোচ্চ ম্যাচ ফি’র ৫০ শতাংশ জরিমানা এবং একটি বা দু’টি ডিমেরিট পয়েন্ট।
এসব ঘটনায় ভারতীয় গণমাধ্যম যেন উঠেপড়ে লাগে বাংলাদেশের সমালোচনা করতে। তারা সমালোচনা করতে গিয়ে শুরু করে একপেশে প্রতিবেদন করা। তারা এও বলছে আজ নাকি ভারত বাংলাদেশকে আদব শেখাবে।