ভারতজুড়ে ভারী বৃষ্টি, বজ্রপাত ও ঝড়ো আবহাওয়ায় কমপক্ষে ৪০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
শক্তিশালী ধুলিঝড়, বৃষ্টি ও বজ্রপাতে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১৮ জনের। অন্ধ্র প্রদেশ ও তেলেঙ্গানায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। রাজধানী দিল্লীতে মারা গেছেন ৫ জন ও পশ্চিমবঙ্গে ১১ জন।
বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে। এতে প্রাণহানীসহ বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তরগুলো বলছে, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এই বিরূপ অবস্থা জারি থাকবে। ভারী বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ো আবহাওয়া অব্যাহত থাকবে।
ভারতের স্থানীয় নৌবন্দরগুলোকে মধ্যম মাত্রার (অরেঞ্জ ক্যাটাগরি) সতর্কতা দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এতে উত্তরের পাহাড়ি এলাকা, উত্তর –পূর্ব ও ওড়িশা এলাকার আবহাওয়া মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারে।
সূত্র আরও জানায়, এই শক্তিশালী ধুলিঝড়ে উত্তর প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। উত্তর প্রদেশের সামবালপুরে বজ্রপাতের কারণে প্রায় ১০০ ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। ঝড়ে অন্ধপ্রদেশে কমপক্ষে আটজন প্রাণ হারিয়েছে, যার বেশিরভাগ মানুষ ছিল শ্রীকাকুলাম জেলার। তেলেঙ্গানায় তিনজন কৃষক নিহত হয়েছে।
এ ছাড়া দক্ষিণ পশ্চিমবঙ্গে বজ্রপাত ও ঝড়ে চার শিশুসহ মোট নয়জনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। দিল্লির ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনে পাঁচজন নিহত হয়েছে। এর মধ্য বৃহত্তর নয়দায় বিলবোর্ডের নিচে চাপা পড়ে একজন স্কুটারচালক মারা গেছেন এবং তাঁর ছেলে আহত হয়েছেন।
বিমান বন্দরের একজন মুখপাত্র বলেন, রোববার সন্ধ্যায় দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়। প্রায় ৭০টিরও বেশি বিমান বাতিল করা হয়।
এই ঝড়ে দিল্লির মেট্রো রেল সেবাও বাধাপ্রাপ্ত হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট হাজার হাজার যাত্রী ব্লু লাইনে আটকে থাকে। ঝড়ের সতর্কতাস্বরূপ মেট্রো রেল স্বাভাবিক গতির চাইতে ধীরে চলেছে।
বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর আকাশ কালো হয়ে যায়। তারপরই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড়ে রাস্তায় গাছ পড়ে দিল্লির রাস্তায় বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়।
আবহাওয়া অফিস বলছে, জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে হরিয়ানায় ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। হরিয়ানা থেকে নাগাল্যান্ডের পূর্ব-পশ্চিমমুখী বাতাস এবং বঙ্গোপসাগরের পূর্বমুখী বাতাস ঝড়ের গতিকে আরো বেগবান করছে।
মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইট বার্তায় বলেন, ঝড়ে প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সর্বোচ্চ সাহায্য প্রদান করা হবে।
গত সপ্তাহে আবহাওয়া কার্যালয় থেকে দেশটির ১৩টি রাজ্যে বড় ধরনের ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। এই সতর্ককতার কারণে দিল্লি, চন্ডিগড় এবং হরিয়ানার সব বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং অতিরিক্ত পুলিশ ও জরুরি সেবার জন্য সবাইকে প্রস্তুত রাখা হয়।
এর আগে এই মাসের শুরুতে বৃষ্টির সঙ্গে ধুলিঝড়ে উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানসহ পাঁচটি রাজ্যে ১০০ জনেরও বেশি প্রাণহানি ঘটে।