স্বাস্থ্য ডেস্ক: একথা তো সবারই জানা আছে যে শরীর যত সুস্থ এবং সুন্দর থাকবে, তত মন এবং জীবন আনন্দে ভরে উঠবে। কিন্তু বাস্তবে এই আপ্তবাক্য়টি কজনই বা মেনে চলেন বলুন! আচ্ছা আপনি নেই তো অসুস্থদের দলে? উত্তরটা যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে কিন্তু বেজায় চিন্তার বিষয়!
এই লেখায় বেশ কিছু মশলার প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। গবেষণা বলছে নিয়মিত এগুলি খেলে নাকি প্রায় প্রতিটি মারণ রোগই দূরে পালাতে শুরু করে। ফলে আয়ু বৃদ্ধি পায় চোখে পড়ার মতো।
আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই সব মশলাগুলি সম্পর্কে যাদের হাতে রয়েছে সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি…
১. লবঙ্গ
এর অন্দরে থাকা একাধিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান একদিকে যেমন দাঁতের যন্ত্রণা সহ যে কোনও ধরনের ব্যথা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনি পেটের রোগের প্রকোপ কমাতে এবং শরীরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২.আদা
নানাবিধ রোগের চিকিৎসায় সেই আদি কাল থেকে কাজে লাগানো হচ্ছে এই মশলাটিকে। কেন হবে নাই বা বলুন, হলুদে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি ওজন হ্রাসেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই যাদের পরিবারে ওজন বৃদ্ধি এবং ডায়াবেটিস রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা হলুদকে সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না।
৩. হলুদ
অ্যালঝাইমার এবং ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে হলুদের কোনও বিকল্প নেই। কারণ এই মশলায় উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নানাভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়, সেই সঙ্গে দেহের অন্দরে যাতে কোনও ভাবেই রোগ সৃষ্টিকারি উপাদানগুলি শক্তিশালী না হয়ে ওঠে সেদিকেও খেয়াল রাখে। এখানেই শেষ নয়, হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন নামে একটি উপাদান শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে দেয় না। ফলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৪.ধনে বীজ
প্রায় ৭ হাজার বছর ধরে ভারতীয় রান্নায় এই প্রাকৃতিক উপাদানটির ব্যবহার হয়ে আসছে। আর কেন হবে নাই বা বলুন! একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে ধনিয়া বীজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই যাদের পরিবারে কোনও ধরনের হার্টের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খেতে ভুলবেন না যেন!
৫. দারুচিনি
এই মশলাটি তো সবারই বাড়িতেই থাকে। তবে কজনই বা জানেন যে প্রতিদিন দারুচিনি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ার সুযোগই পায় না। ফলে ডায়াবেটিসের মতো রোগ দূরে থাকে।
৬. রসুন
খাবারকে সুস্বাদু বানানোর পাশপাশি একাধিক নন-কমিউনিকেবল ডিজিজকে দূরে রাখতে রসুনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, ওজন কমাতেও এই মশলাটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭.গোলমরিচ
শরীরে জমে থাকা ক্যালোরি বার্ন করতে এই মশলাটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে প্রতিটি খাবারে এই মশলাটি মেশালে, খাবার প্রতি প্রায় ১০০ ক্যালোরি বার্ন হয়। এই পরিমাণ ক্যালোরি যদি প্রতিদিন বার্ন হতে থাকে, তাহলে ওজন কমতে যে একেবারেই সময় লাগবে না, তা বলাই বাহুল্য!
৮.জিরা
খাবারে মাত্র এক চামচ জিরা মিশিয়ে সেই খাবার খেলে চোখে পড়ার মতো ওজন কমে। কারণ এই মশলাটি শরীরে জমে থাকা মেদ ঝরিয়ে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে, ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখতে এবং রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯.এলাচ
এই মশলাটি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটিয়ে ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ২০০৮ সালে জার্নাল অব এথনোফার্মাকোলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে নিয়মিত এলাচ খেলে যে কোনও ধরনের পেটের রোগ সারতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ডায়ারিয়া এবং কনস্টিপেশনের মতো রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।