অনলাইন ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরের কাছে আজ রোববার ভোরে পাটনা-ইন্দোর এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে নিহত যাত্রীর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম ও পুলিশ বলছে, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫০। হতাহত যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এএফপির খবরে জানা যায়, কানপুরের পাক্রায়ন এলাকার কাছে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। সে সময় বেশির ভাগ যাত্রীই ঘুমাচ্ছিলেন। উত্তর প্রদেশের এডিজি দলজিৎ সিং চৌধুরী জানান, এ পর্যন্ত নিহত যাত্রীর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। অনেক যাত্রীই গুরুতর আহত। ভারী যন্ত্র দিয়ে বগিগুলো কেটে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত বগির মধ্যে আরও যাত্রী আটকে আছেন কি না, তা তল্লাশি করে দেখছেন উদ্ধারকর্মীরা।
কানপুর পুলিশের আইজি জাকি আহমেদ জানান, আহত যাত্রীদের স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আহত যাত্রীদের আনা-নেওয়ায় ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স কাজ করছে। যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বেশ কয়েকটি বাস দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছে। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বগিগুলো একটি আরেকটির ওপর পড়ে রয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, রেললাইনের ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নর্দান সেন্ট্রাল রেলওয়ের মুখপাত্র বিজয় কুমার জানান, এসটু বগিটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে থাকা যাত্রীদের হতাহত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তিনি আরও জানান, জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্মকর্তারা উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত চারটি বগিও লাইনচ্যুত হয়েছে।
লাইনচ্যুত ট্রেনের একাংশ। ছবি: রয়টার্স
কানপুর রেঞ্জের ডিআইজি রাজেশ মোদক বলেন, ট্রেনের দুটি বগি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকে নিহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভারতের রেলওয়ের মুখপাত্র অনিল সাক্সেনা বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও চিকিৎসক দল কাজ করছে। জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁরা সব সময় যোগাযোগ রাখছেন।
এনডিটিভির খবরে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গভীর শোক জানিয়ে বলেছেন, দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সঙ্গে কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, দুর্ঘটনাস্থলে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনী পাঠানো হয়েছে।
ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব পুলিশের ডিজিকে উদ্ধারকাজ তদারকির নির্দেশ দিয়েছেন। রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় রেল যোগাযোগব্যবস্থা রয়েছে ভারতে। সেখানে দূরের ভ্রমণে রেলপথই প্রধান মাধ্যম। কিন্তু রেলের অবকাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে। প্রায়ই বড় বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। ২০১৪ সালে উত্তর প্রদেশে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত হয়। গত বছর মধ্যপ্রদেশে ভারী বৃষ্টিতে দুটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ২৭ জন নিহত হয়।
২০১০ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন নিহত ও ২০০–এরও বেশি আহত হয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট