স্বাস্থ্য ডেস্ক: প্রতিদিনের রান্নায় আমরা যে সকল মশলা ব্যবহার করি তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভেষজ গুণ রয়েছে হলুদের মধ্যে। সুস্বাস্থ্য রক্ষায় হলুদের ভূমিকা নানাবিধ। প্রায় ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে (আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে) হলুদের সন্ধান পায় মানুষ। ট্রপিক্যাল আবহাওয়ায় হলুদের চাষ ভালো হয়।
হলুদ যে ভালো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তা তো জানেন। এশিয়ার বহু দেশে ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট হিসাবে হলুদ ব্যবহার করা হয়। কারণ হলুদে প্রচুর পরিমানে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন সি রয়েছে। হলুদ রান্নায় খেলে ভালো। কাঁচা হলুদ বেটে মাখলে তা ত্বকের পক্ষে ভালো। ব্যাথার উপশমে হলুদ সাহায্য করে। এতো গেল হলুদের কথা।
যদি এক চামচ হলুদ গরম পানিতে গুলে খান তার যেসব উপকারিতা রয়েছে জানেন কি… জেনে নিন…
এক্ষেত্রে বাজারের কেনা প্যাকেট হলুদের বদলে যদি কাঁচা হলুদ কিনে শুকনো করে গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো করে নিতে পারেন, তাহলে ভালো ফল পাবেন।
আমেরিকার একটি গবেষণা পত্র থেকে জানা গিয়েছে, ব্রেনের জটিল অসুখ, অ্যালঝাইমার্স, ব্রেন টিউমার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সেরে যায় যদি প্রতিদিন গরম পানিতে হলুদ খান। তবে একেবারে গরম নয়, ইষদুষ্ণ গরম পানিতে এক চামচ হলুদ ফেলে গুলে খান। সকালে খালি পেটে খেতে পারলে ভালো। এছাড়াও দিনের যেকোনও সময় খেতে পারেন।
জন্ডিস, হেপাটাইটিস, লিভার বড় হয়ে যাওয়া, হজমের সমস্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও খুব কাজে দেয় হলুদের পানি। যাদের হজম, গ্যাস ইত্যাদির ক্রনিক সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন খেতে পারেন হলুদ পানি। খেয়াল রাখবেন হলুদ মেশানোর পর তা যেন অন্তত দশ মিনিট ধরে ফোটে।
এছাড়াও যে উপকার গুলি পাবেন-
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধকারী ও অন্ত্রের ক্যান্সার নিরাময় করে।
শিশুদের লিউকেমিয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদ অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার উপশমে চমৎকার কাজ করে।
কোমো থেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রোধে সাহায্য করে।
টিউমার হওয়া বন্ধ ও নতুন রক্ত উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
এটি চর্বি বিপাকে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।
হলুদের গাঠ পিষে, ঘিয়ে ভেজে চিনি মিশিয়ে কিছু দিন খেলে (নিয়মিত) ডায়াবেটিস সারে।
যে কোনো চর্ম রোগের জন্য হলুদ অনেক উপকারী। কাঁচা হলুদের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে শরীরে মাখলে একজিমা, অ্যালার্জি, চুলকানি ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মানসিক অবসাদ রোধে সাহায্য করে।
সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ দেয় হলুদ। কাশি কমাতে হলে হলুদের রস খেয়ে নিন কয়েক চামচ, কিংবা এক টুকরো হলুদের সাথে মধু মাখিয়ে তা মুখের মাঝে রেখে আস্তে আস্তে চুষতে পারেন। সেটা করতে না পারলে এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়ো, সামান্য মাখন এবং গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন। কয়েকবার খেলে নিজেই তফাৎ বুঝতে পারবেন।
হলুদের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ লবণ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লোহা প্রভৃতি নানা পদার্থ রয়েছে। তাই হলুদ খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
হলুদের অন্য এক উপাদান ‘পলিফেনল’ চোখের অসুখ ‘ক্রনিক অ্যান্টিরিয়ার ইউভেইটিস’ সারাতে কর্টিকোস্টেরয়ডের কাজ করে।
উল্লেখ্য, এই রোগের প্রকোপে চোখে প্রচণ্ড জ্বালা ও ব্যথা
হয়। সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া