খেলার খবর: এতদিন ধরে ফুটবলের কোনো খোঁজ রাখেনি বা মহাকাশ ভ্রমণ শেষে পৃথিবীতে ফেরা কোনো নভোচারী বা লম্বা সময় ধরে কোনো মিশনে থাকা কোনো সেনা হঠাৎ বিশ্বকাপের বর্তমান অবস্থায় চোখ বুলালে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যেতে পারেন যে, তিনি আসলে বিশ্বকাপ দেখছেন নাকি ‘ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ’ দেখছেন।
অবশ্য এমনটা না ভাবার কোনো কারণ নেই। কেননা বিশ্বকাপের শেষ আটের প্রথম দুই ম্যাচ শেষে যে এখন শুধু টিকে আছে ইউরোপেরই ৬টি দল। শনিবার ছিটকে যাবে আরো দুটি দল। পরে সেমিফাইনালের চেহারা হবে পুরোপুরি ইউরো কাপের মতো।
বিশ্বকাপের ৮৮ বছরের ইতিহাসে হয় ইউরোপ না হয় লাতিন, এই দুই অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল বিশ্বকাপের শিরোপা। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে মিলে লাতিন আমেরিকার পক্ষে বিশ্বকাপ শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে ৯ বার। অন্যদিকে ইউরোপের জার্মানি, ইতালি, ইংল্যান্ড ফ্রান্স ও স্পেন মিলে শিরোপা জিতেছে মোট ১১ বার।
তবে ২০০২ সালে ব্রাজিল নিজেদের পঞ্চম বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার পর আর একবারও শিরোপা জেতেনি ইউরোপের বাইরের কোন দেশ। যা ব্যত্যয় ঘটবে না এবারের বিশ্বকাপেও। কেননা শুক্রবার রাতে ব্রাজিলের বিদায়ের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয়েছে অল ইউরোপিয়ান সেমিফাইনাল। ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালের চার দলই খেলবে ইউরোপ থেকে।
অল ইউরোপিয়ান সেমিফাইনালের আশঙ্কা করা হচ্ছিলো দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচগুলো শেষ হওয়ার পরপরই। সবাইকে অবাক করে দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে আর্জেন্টিনা বিদায় নিলে কমে যায় লাতিনদের শক্তি। শেষ আটে টিকে ছিল কেবল ব্রাজিল ও উরুগুয়ে। কিন্তু তাদের প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম ও ফ্রান্স দুর্দান্ত ফর্মে থাকায় ব্রাজিল-উরুগুয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা ছিল অনেক।
শেষ আটের প্রথম দুই ম্যাচেই বাস্তবে পরিণত হয়েছে এই শঙ্কা। প্রথম ম্যাচে এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নেয় উরুগুয়ে। বিশ্বকাপে কেবল থেকে যায় ব্রাজিল। ঘণ্টাখানেক পর আরেক ইউরোপিয়ান দল বেলজিয়ামের কাছে ২-১ গোলে হেরে শেষ লাতিন দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরাও।
শনিবার মাঠে গড়াবে কোয়ার্টার ফাইনালের বাকি দুই ম্যাচ। ইংল্যান্ড খেলবে সুইডেনের বিপক্ষে, স্বাগতিক রাশিয়ার মুখোমুখি হবে এখনো পর্যন্ত দুর্দান্ত খেলা ক্রোয়েশিয়া। যে দুই দলই জিতুক না কেন, টানা চতুর্থবারের মতো ইউরোপেই থেকে যাচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট।