নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্তে ১৪০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার হওয়া মামলার এজাহারভূক্ত আসামিরা প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ বলছে স্বর্ণসহ আটক আসামি আলিউজ্জামানের স্বীকারোক্তির কারণে এক উইপি সদস্যসহ চারজনকে মামলার এজাহারে নাম দেওয়া হলেও তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে সীমান্ত এলাকায় প্রচার রয়েছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এই মামলার এজাহার ভূক্ত ৩ আসামি চার্জশিট থেকে নিজেদের নাম বাদ দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে, পুলিশের বিশেষ অভিযানে ধড় পাকড় অব্যাহত থাকলেও স্বর্ণ চোরাচালানী মামলার আসামিরা কীভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে তা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, চলতি বছরের ২সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার তলুইগাছা ক্যাম্পের সামনে থেকে হিরোহোন্ডা মটরসাইকেলসহ কলারোয়ার উপজেলা কেঁড়াগাছি গ্রামের আলিউজ্জামান নামের এক স্বর্ণ চোরাচালানীকে আটক করে বিজিবি। পরে তার মটরসাইকেলে তল্লাশি চালিয়ে ১৪০পিচ স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। তবে এই মটরসাইকেলের কাগজপত্রের প্রকৃত মালিক কলারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি গ্রামের রবীন্দ্রনাথ দাস। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আলীউজ্জামান জানায়, ০১৭১২-০৮৭৩৭৪ নাম্বার মোবাইলের মাধ্যমে সাতক্ষীরার রাজার বাগান কলেজের সামনে পাকা রাস্তার উপর থেকে এই স্বর্ণ সে গ্রহণ করে। সে জানায়, স্বর্ণের মালিক কলাারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি গ্রামের ইউপি সদস্য মহিদুল হক, ফিরোজ হাজরা ও রস্তম হাজরা। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক সাতক্ষীরা ৩৮ বিজিবির হাবিলদার আকরাম হোসেন বাদি হয়ে আলিউজ্জামান, মহিদুল মেম্বর ,রস্তম হাজরা ও ফিরোজ হাজরার নামে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের কয়েকদিন পর উদ্ধারকৃত মটরসাইকেলের মালিক রবীন্দ্রনাথ দাসকে শহরের পলাশপোল এলাকা থেকে পুলিশ আটক করে জেল হাজতে পাঠায়। সম্প্রতি রবিন্দ্র নাথ দাস আদালত থেকে জামিনে মুক্তিও পেয়েছে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা জানান, মটর সাইকেল মালিক রবিন্দ্রনাথ দাস চোরাকাববারি। চোরাচালানী তার নেশা ও পেশা । সে আন্ত:জেলা স্বর্ণ চোরাকারবারি দলের একজন সক্রিয় সদস্য। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন মোল্লা আরও জানান, এজাহারে দেওয়া ০১৭১২-০৮৭৩৭৪ মোবাইল নাম্বার অনুয়ায়ী সাতক্ষীরা শহরের পুরাতন সাতক্ষীরার সঞ্জয়কেও গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত সঞ্জয় এই স্বর্ণ চোরাচালান দলের একজন সক্রিয় সদস্য। মটর সাইকেল ও স্বর্ণসহ আটল আলীউজ্জামানের পিতা শফিকুল ইসলাম জানান, তার ছেলের চায়ের দোকানদার ছিল। ঘটনার দিন বাড়ি থেকে দোকানে মালামাল আনার জন্য সে ব্াশদহা বাজারে য়ায়। এই সময় কে বা কারা অর্থের লোভ দেখিয়ে শভপল স্বর্ন রাখা মটরসাইকেলটি তার কাছে দেয়। পরে বিজিবি তাকে আটক করে।
তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা জানান, আটককৃত আসামি আলিউজ্জামানের স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী মহিদুল মেম্বর, ফিরোজ হাজরা, রস্তম হাজরাকে আসামি করে বিজিবি মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামালার তদন্তে মহিদুল, রস্তম হাজরা, ফিরোজের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। এই কারণে তাদের নাম চার্জশিটে নাও যেতে পারে। তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, তারা এই ঘটনার সাথে জড়িত নন। সে কারণে তারাতো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতেই পারে।
মামলার বাদি সাতক্ষীরা ৩৮ বিজিবির হাবিলদার আকরাম হোসেন মুঠোফোনে জানান, স্বর্ণসহ আটক আলিউজ্জামানের স্বীকারোক্তি মোতাবেক অন্যদের মামলার এজাহারে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দিলে তাদের কিছু করার নেই। তবে তিনি আদালতে স্বাক্ষী দেওয়ার সময় বিষয়টি বলবেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট