দেশের খবর: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ১ লাখ ৪৪ হাজার মে. টন কয়লা গায়েবের ঘটনায় সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে মামলাটি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়েছে।
পার্বতীপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফখরুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ‘মামলাটি দুদকের আওতাধীন হওয়ায় তদন্তের জন্য ইতোমধ্যেই দুদকে পাঠানো হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- সাময়িক বরখাস্তকৃত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুর-উজ-জামান চৌধুরী, উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) একেএম খালেদুল ইসলাম, সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, সদ্য বিদায়ী কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানীয়া, ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) জাহিদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক, উপ-ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মোর্শেদুজ্জামান, উপ-ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) হাবিবুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) জাহেদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক (ভেল্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্রনাথ বর্মন, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান, উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) জোবায়ের আলী, প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী এবং মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) গোপাল চন্দ্র সাহা।
অভিযোগে জানানো হয়, খনি উন্নয়নের সময় (২০০১) থেকে ১৯ জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত মোট ১ কোটি ১ লাখ ৬৬ হাজার ৪২ দশমিক ৩৩ মে. টন কয়লা উৎপাদন করা হয়েছে। উৎপাদিত কয়লা থেকে পার্শ্ববর্তী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬ লাখ ৮৭ হাজার ২৯ দশমিক ২৯ মে. টন কয়লা সরবরাহ, বেসরকারি ক্রেতাদের কাছে ডিও’র মাধ্যমে ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ২৮০ দশমিক ৩৭ মে. টন কয়লা বিক্রি এবং কয়লা খনির বয়লারে ১২ হাজার ৮৮ দশমিক ২৭ মে. টন কয়লা ব্যবহার করা হয়। কয়লার উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার হিসাব করলে ১৯ জুলাই কোল ইয়ার্ডে রেকর্ডভিত্তিক কয়লার মজুদ দাড়ায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ মে. টন। কিন্তু বাস্তবে মজুদ ছিল প্রায় ৩ হাজার মে. টন কয়লা। অর্থাৎ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ মে. টন কয়লা ঘাটতি রয়েছে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৩০ কোটি টাকা বলে জানানো হয়।
অভিযোগে বলা হয়, এই ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকি ১৫ জন আসামি অনেক আগে থেকেই তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে সংঘটিত কয়লা চুরির ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে অনুমিত হয়।
মজুদকৃত কয়লার হিসাবের গড়মিলের বিষয়টি দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারা অনুযায়ী এজাহারভুক্ত করে তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।