বিদেশের খবর: ভারতের দিল্লির এক শরণার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মুসলিমরা তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত না পাঠাতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ‘আমাদের দেশে সম্পূর্ণ শান্তি না আসা পর্যন্ত দয়া করে আমাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাবেন না, আমরা অসহায়, আমাদের এখানে থাকতে দিন। ওরা আমাদের মেরে ফেলবে।’
দিল্লির ওই শরণার্থী ক্যাম্পের এক বাসিন্দা গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারত থেকে সম্প্রতি যে সাত শরণার্থীকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তারা আর বেশি দিন বাঁচতে পারবেন না। খুব শিগগিরি তাদেরকে হত্যা করা হবে।’
দিল্লির কালিন্দিকুঞ্জ ক্যাম্পে থাকা মুহাম্মদ ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এখানে ২০১২ সাল থেকে বাস করছি। সরকারের উদ্দেশ্যে আমাদের একটিই আবেদন, আমাদের এখানে থাকতে দেয়া হোক। আমরা মিয়ানমারে অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি। কোনো প্রলোভনে নিজের দেশ ছেড়ে এখানে আসিনি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমস্ত তথ্য জাতিসংঘের কাছে আছে। কিছুদিন আগে পুলিশ বর্মী ভাষার এক ফরম নিয়ে এসেছিল কিন্তু আমরা তা পূরণ করতে অস্বীকার করেছি।’
হারুণ নামে এক রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেন, ‘আমরা ২০০৫ সাল থেকে ভারতে বাস করছি। কিন্তু সরকার ২০১৭ সাল থেকে ভিসা নবায়ন করা বন্ধ করে দিয়েছে। মিয়ানমারে আজও আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে।’
সম্প্রতি অসমের শিলচরের কাছাড় কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকা সাত রোহিঙ্গা যুবককে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করেছে ভারত। বেআইনিভাবে ভারতে ঢোকার দায়ে ২০১২ সালে তারা গ্রেফতার হয়েছিল।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থায় নিবন্ধিত তথ্য অনুযায়ী ভারতে ১৪ হাজার রোহিঙ্গা বাস করেন। কিন্তু সরকারি তথ্য মতে ওই সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সম্প্রতি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য নথিভুক্ত করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কূটনৈতিক পথে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করা হবে বলেও রাজনাথ সিং বলেন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহিষ্কার করার পক্ষপাতি।
ওরা আমাদের মেরে ফেলবে!
পূর্ববর্তী পোস্ট