দেশের খবর: পরিবহন শ্রমিকদের দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে সাধারণ মানুষ এবং নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি, লাঞ্ছনা ও ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাধা দেয়ায় মুখে কালি মেখে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। পাশাপাশি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ অভিনব প্রতিবাদ জানান তারা।
মানববন্ধনে তারা বিভিন্ন প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। যাতে লেখা ছিল ‘ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কেন?’, ‘আলকাতরা সন্ত্রাস নিপাত যাক’, ‘দেশের বুকে চুনকালি শ্রমিক নেতার নেই বুলি’, ‘স্কুল ড্রেসে কালি কেন?, ‘কালি নাকি কলঙ্ক?’। এ সময় শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা, আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি না করা এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য রোগী বহনকারী গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে দেয়া।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ধর্মঘটের নামে দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে একধরনের তামাশা শুরু হয়েছে। সর্বত্র সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স, সরকারি গাড়ি, ব্যক্তিগত পরিবহন কোনো কিছু রেহাই পাচ্ছে না তাদের হাত থেকে। এমনকি তারা নারীদেরও হয়রানি করছে। সাধারণ মানুষকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। কোনো সভ্য সমাজে এসব চলতে পারে না। আমরা এর অবসান চাই। সরকারকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল করিম বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। আমাদের সংবিধানে আমাদের আন্দোলনের অধিকার দিয়েছে কিন্তু নৈরাজ্য সৃষ্টির অধিকার দেয়নি। আমরা শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নই, নিরীহ শ্রমিকদের লেলিয়ে দিয়ে ধর্মঘটের নামে এই অরাজকতা সৃষ্টি চলতে পারে না। এই ক্ষেত্রে আমরা রাষ্ট্রেও জোরালো ভূমিকা চাই।
তিনি বলেন, ধর্মঘটের কারণে মৌলভীবাজারে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আমরা বলতে চাই, এটি মৃত্যু নয়, হত্যা। আমরা এই অরাজকতাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি৷
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের দাবিদাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে আমরা কথা বলছি না। কিন্তু তাদের আন্দোলনের যে রূপ বা পদ্ধতি, তা একেবারেই ঠিক নয়। তারা যেভাবে আন্দোলন করছে, সেটা আন্দোলনের ভাষা হতে পারে না।