দেশের খবর: আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে (তাকমিল) সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সমান স্বীকৃতি দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ রোববার সংবর্ধনা দেবেন এ সেক্টরের আলেমরা।
অবশ্য তারা এ অনুষ্ঠানকে বলছেন- শোকরানা মাহফিল। এতে সারা দেশের ১০ লক্ষাধিক আলেমের সমাগম হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
এ উপলক্ষে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ শেষ।
উদ্যানে নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণকারীরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আগেও অনেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সোহরাওযার্দী উদ্যানে এসেছেন। কিন্তু এবারের আয়োজন একটু ব্যতিক্রম। বিশাল এলাকাজুড়ে প্যান্ডেল, বসার জন্য চেয়ার, বিভিন্ন স্থানে পর্য়াপ্তসংখ্যক টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে। ভোর থেকেই সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন আলেমরা।
রাজধানীতে এ বড় সমাবেশকে সামনে রেখে এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছে। আজকের পূর্বনির্ধারিত জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ৯ নভেম্বর সকাল ৯টায় ওই পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম ছায়েফউল্যা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনার স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান শনিবার দুপুরে পরিদর্শন করেছেন জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও জমিয়াতুল উলামার চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ।
এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা আশা করছি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ শোকরানা মাহফিলে উপস্থিত হবেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি নির্বাচনী সমাবেশ নয়; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি মাদ্রাসার জন্য নজিরবিহীন একটি কাজ করেছেন, যা এর আগে কেউ-ই করেনি। আমরা তাকে শুকরিয়া জানাতেই একত্র হব।
আল্লামা আহমদ শফী শোকরানা মাহফিলে উপস্থিত থাকবেন কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ উপস্থিত থাকবেন। তিনি নিজেই তো প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত দিয়েছেন। এ মাহফিলের সভাপতিত্বও করবেন তিনি। আমরা দোয়া করছি, তাকে আল্লাহতা’আলা সুস্থ রাখুন।
হেফাজতে ইসলাম একসময় সরকারের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিল, এখন পক্ষে চলে এসেছে কীভাবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে আল্লামা মাসউদ বলেন, হেফাজতে ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে ছিল না।
তারা শাপলা চত্বরে তাদের দাবি সরকারের কাছে পেশ করেছিল। আর এখন তো অনেক বড় একটি কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করে দিয়েছেন। কওমি মাদ্রাসা স্বীকৃতি, আইন পাস করানো ছোট কোনো বিষয় নয়। এটি নজিরবিহীন।
আলেমদের এ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনো দাবি রাখা হবে কিনা জানতে চাইলে মাসউদ বলেন, সে রকম কোনো বিষয়ে সম্মিলিত পরামর্শ হয়নি। তবে জামায়াত নিষিদ্ধকরণ, কাদিয়ানিদের মিথ্যাচার প্রচারের বিরুদ্ধে আলোচনা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়েও ভালো ভূমিকা রাখতে পারেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সহসভাপতি মাওলানা ইয়াহয়া মাহমুদ, মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, বাংলাদেশ জমিয়াতুল উলামার মহাসচিব মাওলানা আবদুর রহিম কাসেমী, অভিভাবক পরিষদ সদস্য মাওলানা আইয়ুব আনসারী, ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা মাসউদুল কাদির প্রমুখ। সারা দেশে ১৩ হাজার ৯০২টি কওমি মাদ্রাসায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী আছে।