দেশের খবর: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সহযোগী সংগঠন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনীত হয়েছেন।
জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা আজ বৃহস্পতিবার হিরো আলমের হাতে এ সংক্রান্ত পত্র তুলে দেন।
পরে জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এম. এ. রাজ্জাক খানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এমপির আদর্শে অনুপ্রাণিত আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম) জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনীত হয়েছেন।
জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম শক্তিশালী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা এবং সাধারণ সম্পাদক নাজমুল খান সংগঠনের গঠনতন্ত্রের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে হিরো আলমকে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছেন। যাহা- ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে।’
হিরো আলমকে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টিতে পদ দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সংগঠনের সভাপতি চিত্রনায়ক সোহেল রানা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, হিরো আলম কালচারাল মাইন্ডের ছেলে। জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি হচ্ছে জাতীয় পার্টির অন্যতম সহযোগী সংগঠন। জাতীয় কালচারাল পার্টি কালচারালি যারা ডেভেলপ, যাদেরকে বেশি কালচারাল মনে করা হবে, বা মনে করা যাবে এদেরকে নিলে পার্টির জন্য প্রয়োজনীয় হবে। আর যেহেতু ও (হিরো আলম) একেবারে মাটির ছেলে, মাটির সঙ্গে আমাদের যে সংস্কৃতি আছে সেটাকে তুলে ধরতে পারে, সে কারণে। সে পার্টি থেকে ইলেকশনও করেছে। আমি মনে করি সে কালচারাল পার্টির জন্য যোগ্য। সে অনেক জনপ্রিয়ও। সে সত্যি কথা বলতে একটুও ভয় পায় না। যেহেতু সে অনেক জনপ্রিয়, পার্টির কিছু কিছু কাজে তাঁকে ব্যবহার করা যাবে। সে কারণে তাঁকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে।
হিরো আলম গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন। দলের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
হিরো আলম ১৯৮৫ সালের ২০ জানুয়ারি বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুর রাজ্জাক, মা আশরাফুন বেগম। প্রথম দিকে নিজ গ্রাম এরুলিয়ায় সিডি বিক্রির কাজ করতেন এবং পরবর্তীতে স্যাটেলাইট টিভি সংযোগের (ক্যাবল অপারেটর) ব্যবসায় নামেন। ক্যাবল সংযোগের ব্যবসা চলাকালে শখের বশে তিনি মিউজিক ভিডিও নির্মাণ শুরু করেন। ইউটিউবে তাঁর আপলোড করা মিউজিক ভিডিও নিয়ে ২০১৬ সালের দিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে বাংলাদেশের ব্যবহারকারীরা ট্রল এবং মিমি তৈরি শুরু করলে দ্রুতই তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। এ সময় জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা মুশফিকুর রহিমসহ বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি তারকা হিরো আলমের সঙ্গে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন।
এরপর বিবিসি হিন্দি, জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডেসহ ভারতের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো হিরো আলমকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ফলে তিনি ভারতীয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে আলোচিত হন। ইয়াহু ইন্ডিয়ার এক জরিপ অনুসারে সে সময় ভারতীয় অভিনেতা সালমান খানের চেয়ে হিরো আলমকে বেশিবার গুগলে অনুসন্ধান করা হয়। ২০১৮ সালে গুগল অনুসন্ধানের প্রবণতায় বাংলাদেশে দশম অবস্থানে থাকেন হিরো আলম।
২০১৭ সালের ১১ আগস্ট হিরো আলম অভিনীত প্রথম ছবি মার ছক্কা মুক্তি পায়। ২০১৮ সালে তিনি বিজু দ্য হিরো নামে একটি বলিউড সিনেমায় অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এ ছাড়া বাংলাদেশে বেশকিছু বিজ্ঞাপণচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
হিরো আলমের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগে করা এক মামলায় গত ৬ মার্চ হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১৮ এপ্রিল জামিনে মুক্তি পান তিনি। 6 Shares Share Tweet Share Share