দেশের খবর: রাজশাহীর মোহনপুরে যৌন নির্যাতনের বিচার না পেয়ে সুমাইয়া আক্তার বর্ষা (১৪) নামে নবম শ্রেণির ছাত্রীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) থানা পুলিশের গাফিলতির বিষয়টি দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।
ইতোমধ্যে মোহনপুর থানার ওসি আবুল হোসেনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (২০ মে) দিবাগত রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) সোহেল রানা।
তিনি বলেন, সুমাইয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি মোহনপুর থানার ওসিসহ থানা পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কি না তা খতিয়ে দেখবে।
জেলা পুলিশের ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান মোল্লার নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। একই ঘটনায় সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের স্বার্থে ওসিকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান এআইজি সোহেল রানা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় রাজশাহীর মোহনপুরে নিজ বাড়ির কক্ষ থেকে সুমাইয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আত্মহত্যার আগে চিরকুটে সুমাইয়া লিখে, ‘প্রিয় মা-বাবা, প্রথমেই তোমাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি তোমাদের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি, অনেক আদর অনেক ভালোবাসা। কিন্তু একটা মেয়ের কাছে তার মান-সম্মানটাই সবচেয়ে বড়। আমি আমার লজ্জার কথা সবাইকে বলতে বলতে নিজের কাছে অনেক ছোট হয়ে গেছি। প্রতিদিন পরপুরুষের কাছে এসব বলতে বলতে। আমি আর পারছি না। অপরাধীকে শাস্তি দিলেই তো আমার মান-সম্মান ফেরত পাবো না। আমাকে ক্ষমা করো।’
মেয়ের আত্মহত্যার পর বর্ষার বাবা আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, একই এলাকার ছেলে মুকুলের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২৩ এপ্রিল সুমাইয়াকে অপহরণ করে শহরে নিয়ে যৌন নির্যাতন করে মুকুল।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। আপসের কথা বলে আসামিদের আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে। এতেই ক্ষোভে-অভিমানে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে বর্ষাকে মরতে হতো না বলে অভিযোগ করেন তিনি।