দেশের খবর: গবেষক, স্বরলিপিকার, সংগীতগুরু ও একুশে পদকপ্রাপ্ত নজরুল সঙ্গীতের বরেণ্য শিল্পী খালিদ হোসেন আর নেই। রাজধানীর জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা অবস্থায় বুধবার রাত ১০ টা ১৫ মিনিটের দিকে ইন্তেকাল করেন তিনি। (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)।
বুধবার দিবাগত রাতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে আসিফ হোসেন। পরে খালিদ হোসেনের খালিদ হোসেনের ছোট ভাই মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘বড় ভাই তো দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। প্রতিনিয়ত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই তার চলাফেরা ছিলো। চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রতি মাসেই হাসপাতালে নেওয়া হতো তাকে। প্রতিবারের মতো এবার ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে যান তিনি। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাকে হাসপাতলে রেখে দেন। এ যাত্রায় ভাই আর ফিরলেন না। সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন। ভাইয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন’।
মৃত্যুকালে খালিদ হোসেনের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগে ভুগছেন খালিদ হোসেন। বয়সের সঙ্গে বাড়ে কিডনির জটিলতা , সমস্যা হচ্ছিল ফুসফুসেও। পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত নানা ধরনের সমস্যা তো ছিলোই।
খালিদ হোসেনের চিকিৎসার সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। সেই অনুদানেই চলছিল তার চিকিৎসা। কিন্তু বেঁচে ফেরা হলো না তার। চিরদিনের জন্য চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া ছেড়ে।’
১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর জন্ম খালেদ হোসেনের। ছোটবেলায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে থাকতেন তার পরিবার। দেশ বিভাগের পর মা–বাবার সঙ্গে কুষ্টিয়ার কোর্টপাড়ায় চলে আসেন তিনি। এরপর ১৯৬৪ সাল থেকে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
২০০০ সালে তিনি একুশে পদক পান। এ ছাড়া নজরুল একাডেমি পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদক, কলকাতা থেকে চুরুলিয়া পদকসহ অসংখ্য সম্মাননাসহ অসংখ্য সম্মানে ভূসিত হয়েছেন তিনি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ডে সংগীত নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষক ও নিরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন খালিদ হোসেন।
তার গাওয়া নজরুল সংগীতের ছয়টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। ইসলামি গানের অ্যালবাম রয়েছে ১২টি।