দেশের খবর: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়েছে।মঙ্গলবার তাদের ক্লোজড করে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন- এসআই আবুল খায়ের ও এসআই আজিজুল হক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার রাতে ভৈরবের কলেজের শিক্ষার্থী সজীব আহমেদকে মাদক দিয়ে ফাঁসাতে চেষ্টা করেন ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। ঘটনার দিন দুই বন্ধুসহ সজীব ভৈরব বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাসায় যাওয়ার পথে শহরের বঙ্গবন্ধু রোডের চাদভান্ডারের কাছে পৌঁছালে তাদের গতিরোধ করে পুলিশ। এ সময় সজীবের দুই বন্ধু পালিয়ে গেলেও তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে থানায় যেতে বলে পুলিশ। তারপর এসআই আজিজুলকে মোটরসাইকেলে বসিয়ে থানার কথা বলে সম্ভুপুর চলে যায় সজীব। বিষয়টি দেখে এসআই আবুল খায়ের সজীবের পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে পৌছান। সজীব এলাকায় গিয়ে মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে বাবাকে ঘটনাটি জানায়। সজীবের বাবা ঘটনা শুনে স্থানীয় লোকজনকে বিষয়টি জানালে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ধরে গণধোলাই দেয় গ্রামবাসী।
ঘটনার সময় দুই পুলিশের গায়ে পোশাক ছিল না বলে জানান এলাকাবাসী। এ ঘটনার খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশের একটি টিম সম্ভুপুর থেকে দুই পুলিশকে উদ্ধারসহ ছয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর রোববার ঘটনাটি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মীমাংসা করে আটক সজীবের বাবাসহ ছয়জনকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার পর জেলা পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়। পরে ঘটনাটি তদন্ত করতে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব প্রদান করেন।
সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. মিজানুর রহমান ঘটনা তদন্ত করতে ভৈরবে আসেন। তিনি অভিযোগকারী, অভিযুক্ত দুই পুলিশ, থানা পুলিশের ওসি, এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘটনার সত্যতা আছে বলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন। তদন্ত শেষে সোমবার রাতে পুলিশ সুপারকে ঘটনাটি অবহিত করে একটি প্রতিবেদন প্রদান করেন। পরে মঙ্গলবার অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়।
ভৈরব থানা পুলিশের ভারপ্রাাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, এ ঘটনার তদন্তের ব্যাপারটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. মিজানুর রহমান বলতে পারবেন। তবে অভিযুক্ত দুই এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।