রাজনীতির খবর: বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা অভিযোগ করে বলেছেন, বাজেট বাড়ছে, কিন্তু দেশ ও জনগণের উন্নয়ন হচ্ছে না। দুর্নীতি মহামারি আকার ধারণ করেছে। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে সরকারিদলের নেতারা টাকার পাহাড় তৈরি করছে। অন্যদিকে, বাজেটে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উপর করারোপ করে সরকার সাধারণ মানুষের জীবনকে বিষিতে তুলেছে।
বুধবার (১৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এসময় সভাপতিত্ব করেন।
বাজেট বক্তৃতায় রুমিন ফারহানা বলেন, দেশে ৪ কোটি মানুষ দরিদ্র, ২ কোটি মানুষ হতদরিদ্র কেন। দেশে ৪ কোটি ৮২ লাখ মানুষ কেন কর্মহীন। কেন যুবকরা ইউরোপে পারি দিতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ভাসে, কেন কৃষক ধানে আগুন দেয়। এই বাজেটে এর জবাব পাওয়া যাবে। অর্থনীতিবিদরা বলছে বাজেট গতানুগতিক, আমরাও বলছি গতানুগতিক। বাজেটে এবারও ঘাটতি আছে। এই ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ঋণ নিতে হবে। বৈদেশিক ঋণ নিয়ে প্রকল্প করা হয়। কোনো প্রকল্পই অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে না বরং ঋণের চাপ বাড়বে।
তিনি বলেন, গত এক দশক ধরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ আটকে আছে ২২ শতাংশে। দেশে বেকারত্বের কারণ এই বিনিয়োগ স্থবিরতা। এই মুহূর্তে যে শিশুটি জন্ম নিচ্ছে তার মাথার উপর ঝুলছে ৮০ হাজার টাকার ঋণ। সরকারের আরেকটি বড় ব্যর্থতা হলো আয় কর দেওয়া নাগরিকের সংখ্যা না বাড়ানো। বিদেশি কর্মীদের করজালের মধ্যে আনার ব্যবস্থা সরকার করেনি। ২০১০-১১ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিল ৯২ শতাংশ। সেটা ক্রমান্বয়ে কমে ৭৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থবছর শেষ হওয়ার তিন মাস আগে তড়িঘড়ি করে কাজ করা হয়।
এশিয়ার দ্বিতীয় খারাপ রাস্তার দেশ বাংলাদেশ। ঋণখেলাপিতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। খেলাপিঋণের পরিমাণ ১২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকের টাকা লুটপাট চলছে। ব্যাংকগুলোকে তুলে দেওয়া হয়েছে এক একটি পরিবারের হাতে। শিক্ষার মান উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপের কথা নেই বাজেটে। ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কৃষক ধান ছিটিয়ে ফেলে দিয়েছে, আত্মহত্যা করেছে। কৃষকের ধানের দাম পাওয়ার ব্যাপারে বাজেটে কিছু বলা নেই।
বিএনপির এই এমপি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসা মানেই শেয়ার বাজার ধ্বংস হয়ে যাওয়া। শেয়ার বাজার থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা লুটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুর্নীতির একটি বড় খাত বিদ্যুৎখাত। কথায় কথায় কুইক রেন্টাল করে বিদ্যুৎখাতে লুটপাটের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।