শেখ তহিদুর রহমান ডাবলু/হাসান হাদী : সাতক্ষীরার ৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
১৯৭১ সালে সাতক্ষীরায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠিত করার ৭টি অভিযোগে অভিযুক্ত এই তিন রাজাকার হলেন- সদর উপজেলার আলীপুর বুলারাটীর কুখ্যাত কসাই রাজাকার শিরোমণি এম আব্দুল্লাহহিল বাকী, সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের নবজীবনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক কুখ্যাত আলবদর কমান্ডার খান রোকনুজ্জামান ও ৭১-এ নৃশংসতার কারণে ‘টিক্কা খান’ নামে কুখ্যাতি পাওয়া সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারীর জহিরুল ইসলাম। এদের মধ্যে জহিরুল ইসলাম সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত জামাতের মুখপত্র দৈনিক আলোর পরশ’র ম্যানেজার। বুধবার তাদের বিরুদ্ধে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-০১। এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক এবং সদস্য যথাক্রমে বিচারপতি মো: শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো: সোহরওয়ার্দী।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী ৭টি সুনির্দিষ্ট অপরাধে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৪ রাজাকারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তদন্ত সম্পন্ন করেছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর (আইজিপি পদমর্যাদায়) আব্দুল হান্নান খান।
আগামী ২০ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য্য রয়েছে বলে ডেইলি সাতক্ষীরাকে নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সহকারী পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খান বিপিএম, পিপিএম।
রোকন, বাকী ও জহিরুল ছাড়াও মামলার অপর আসামি হলেন- সাতক্ষীরা জেলা জামাতের সাবেক আমির ও সাবেক সাংসদ কুখ্যাত রাজাকার বৈকারীর মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডল। ইতিপূর্বেই গ্রেফতার হওয়া মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডল বর্তমানে কারাগারে আছেন। অপর তিন রাজাকার বর্তমানে আত্মগোপনে থাকায় তাদেরকে গ্রেফতারের আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর(অতি: এ্যাটর্নি জেনারেল) জিয়াদ আল মালুম এবং রেজিয়া সুলতানা চমন।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন ডেইলি সাতক্ষীরাকে জানান, প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাননীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এম আব্দুল্লাহিল বাকী, খান রোকনুজ্জামান ও মো. জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বুধবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এদিকে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিক্রিয়ায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সদস্য সচিব ও সাতক্ষীরায় মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাকে সার্বিকভাবে সহায়তাকারী হাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন থেকে খালেক, বাকী, রোকন ও জহিরুলকে বিচারের আওতায় আনা এবং তাদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। এই আটকাদেশ আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিশ্চিত করেছে। যদি আগেই এসব মানবতাবিরোধী অপরাধীদের নজরদারিতে রাখা হত তাহলে আজ তারা পালিয়ে থাকতে পারত না। আমরা আশাকরি এখন অন্তত পুলিশ পলাতক বাকী, রোকন ও জহিরুলকে গ্রেফতারে তৎপর হবে।”